আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন ২০-২১ ডিসেম্বর। তার আগে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা কমিটির সম্মেলন হবে। এ সম্মেলনে দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরাই নেতৃত্বে আসবেন। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি যাদের আছে, তারাই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসবেন- এমনটি বলছেন শীর্ষ নেতারা। এদিকে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সামনে রেখে নবীন-প্রবীণ মিলে প্রায় এক ডজন নেতা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বলছেন, সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গড়ে উঠুক। সম্মেলন না হলে কর্মী মূল্যায়ন হবে না এবং দলে শৃঙ্খলাও ফিরবে না। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে জেলার প্রবীণ নেতা মমতাজ উদ্দিন সভাপতি ও মজিবর রহমান মজনু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মমতাজ উদ্দিন মারা যান। এখন ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ডা. মকবুল হোসেন। জেলা নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা অনেকেই মনে করেন, কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে জেলা সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তারপরও ভিতরে ভিতরে অনেকেই কাক্সিক্ষত পদ পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই নিজস্ব সমর্থক সঙ্গে নিয়ে নিয়মিত দলীয় কার্যালয়ে আসছেন। কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, উপজেলার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আগের থেকে সখ্য বাড়িয়ে দিয়েছেন। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন কমিটি গঠন করে উপজেলা সম্মেলনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে জেলা কমিটি থেকে। এরই মধ্যে কয়েকটি ইউনিয়ন ও ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হয়েছে। অন্যান্য ইউনিটেও কাজ চলছে বলে জেলা কমিটির নেতারা জানিয়েছেন। জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের ১৩ ইউনিটের সবগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ। এর মধ্যে বগুড়া পৌর কমিটি ছয় বছর ধরে চলছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী নেতৃবৃন্দ হলেনÑ বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. মকবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনু, সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন দুলু মাস্টার, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু, অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন মুকুল। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে পারেন জেলা কমিটির তিন যুগ্ম সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, টি জামান নিকেতা, মঞ্জুরুল আলম মোহন, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু ও প্রচার সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি। এ ছাড়া প্রয়াত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে এফবিসিসিআইর পরিচালক ও বগুড়া চেম্বার অব কমার্স সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলনও আসতে পারেন জেলা কমিটির কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে এমন গুঞ্জন রয়েছে। সম্মেলন কেন্দ্র করে দলে চলছে নানা আলোচনা। কারা হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের আগামীর কান্ডারি। দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা হলে তারা সরাসরি বলেন, দলে এমন অনেকে আছেন যারা শুধু নামেই বড় নেতা। সাধারণ কর্মীরা প্রয়োজনের সময় তাদের পাশে পায় না। দলীয় কাজেও থাকেন না এবং অর্থ ব্যয় করেন না। তাদের আমরা শীর্ষ পদে দেখতে চাই না। এদিকে দলে এক সময় সক্রিয় ছিলেন, এখন অনেকটা নিষ্ক্রিয় এমন নেতারা বলেন- বগুড়ায় বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে দলে তরুণদের নেতৃত্বে আসা প্রয়োজন। আগামীতে পথ চলতে এখনই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। এ কারণে দলে তরুণ নেতৃত্ব অত্যন্ত জরুরি। প্রবীণরা দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ওপর গুরুত্ব দেন। বলেন, এ মুহূর্তে শক্তভাবে দলের হাল না ধরলে সামনে সংকটে পড়বে। সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারলে দলের শৃঙ্খলাও বাড়বে। এ জন্য চাই নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে সৎ ও পরীক্ষিত নেতৃত্ব।