খুলনায় সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বড় খেসারত দিতে হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগকে। ক্ষোভে-অভিমানে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মী। এর আগে ২০১৮ সালে দলের প্রভাবশালী সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যুতে তার অনুসারীরা রাজনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য হারিয়ে ফেলেন। সেই সঙ্গে তৃণমূলে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় তৈরি হয় সাংগঠনিক শূন্যতা। তবে কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় ৯ উপজেলায় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পরই রাতারাতি পাল্টে যায় দৃশ্যপট। সম্মেলনকে ঘিরে এরই মধ্যে তৃণমূলে শুরু হয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। প্রস্তুতি সভা ও দফায় দফায় বৈঠকে মুখ্য আলোচনা ‘কারা’ গুরুত্বপূর্ণ পদে আসছেন। স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের মাঝেও চলছে লবিং-তদবির। জানা যায়, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে গঠিত খুলনার ছয়টি উপজেলা কমিটিকে দীর্ঘদিন অনুমোদন দেওয়া হয়নি। গত ৪ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এসব কমিটিকে পুনর্গঠন করে অনুমোদন দেওয়া হয়। পাশাপাশি আগামী ১৯ নভেম্বর রূপসা উপজেলা, ২০ নভেম্বর ফুলতলা, ২৩ নভেম্বর বটিয়াঘাটা, ২৪ নভেম্বর তেরখাদা, ২৫ নভেম্বর দিঘলিয়া, ২৭ নভেম্বর ডুমুরিয়া, ২৮ নভেম্বর কয়রা, ৩০ নভেম্বর পাইকগাছা ও ১ ডিসেম্বর দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান জামাল জানান, একক সিদ্ধান্তে কমিটি গঠনের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ছয়টি উপজেলা কমিটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বর্ধিত সভায় সহ-সভাপতি ও সদস্য পদে ৪টি পদ বৃদ্ধি করে ৭১ সদস্যের ওই সব উপজেলা কমিটি পুনর্গঠন ও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। উপজেলা সম্মেলনের পূর্বে প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মেলনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরিদ আহম্মেদ বলেন, দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে মাদক ব্যবসায়ী, দুর্নীতি, চাঁদাবাজ ও হাইব্রিডদের দলে পদ-পদবি দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে উপজেলা পর্যায়ে দলের সদস্য টিকিট বিতরণ ও জেলা সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা যায়নি। জেলা আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী বলেন, দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় জেলা পর্যায়ে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটেনি। দলকে গুছিয়ে আনতে ‘ইয়ং ও এনার্জেটিক’ নেতৃত্ব তৈরির জন্য তৃণমূলে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ।