রাজশাহী আওয়ামী লীগে বিতর্কিতদের নিয়ে অস্থিরতা চলছে। জেলা ও নগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে থাকা এসব বিতর্কিত ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্বের প্রত্যাশা তৃণমূলের। আগামী সম্মেলনে জেলা ও নগরে শীর্ষ পর্যায়সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে নতুন মুখ আসতে পারে। দলীয় সূত্রমতে, রাজশাহী জেলা সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের দ্বন্দ্ব এখন তুঙ্গে। তাদের দ্বন্দ্বের সুযোগে বিএনপি-জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগে ভিড়ে বড় বড় পদ দখলে নেওয়াসহ এমপি, পৌর মেয়র, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়েছেন অনেকে। বিতর্কিত এসব নেতার কারণে জেলার ত্যাগী নেতা-কর্মীরা অনেকটাই কোণঠাসা। জেলা সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘দলীয় কর্মসূচির নামে কী হয় তা সবাই জানে। কাজেই তাদের (সাধারণ সম্পাদক) সঙ্গে দলীয় কর্মসূচি করা যায় না। তবে আমি আমার মতো করে নেতাদের সঙ্গে নিয়ে কর্মসূচি পালন করে থাকি।’ অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘সভাপতি বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের পৃষ্ঠপোষকতা করে গেছেন দিনের পর দিন। তার কারণে দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এ কারণে তার সঙ্গে কোনো কর্মসূচি পালন করা হয় না।’ দলীয় সূত্রমতে, জেলার এই কোন্দল নিরসনে আগামী ৮ নভেম্বর ঢাকায় ডেকে রাজশাহীর নেতাদের নিয়ে বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ওই বৈঠকেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রাজশাহীর রাজনীতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পদ আমার কাছে বড় নয়। আমি দলের সেবক হিসেবে সব ধরনের কাজেই অংশ নিতে চাই। এখানে পদ বড় বিষয় নয়, দলের প্রয়োজনটাই বড় বিষয়।’ জেলার মতো মহানগর আওয়ামী লীগে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব না থাকলেও এখানে বিতর্কিত নেতাদের কারণে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত প্রায় ১১ বছর ধরে ভুঁইফোড় নেতা-কর্মীরা প্রভাব-প্রতিপত্তি ব্যবহার করে একের পর এক নানা অপকর্ম করে চলেছেন। ২০১৩ সালেও যিনি যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন, বিএনপি-জামায়াতের ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন, সেই তিনিও এখন মহানগর আওয়ামী লীগের হর্তাকর্তা। এভাবে বিএনপি ও ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে ভিড়ে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর নগরজুড়ে পুকুর ভরাট থেকে শুরু করে রেলের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের হাতে। জমি দখল থেকে শুরু করে পুকুর ভরাট, সাধারণ মানুষকে হয়রানির তালিকায়ও আছেন আওয়ামী লীগের একাধিক কাউন্সিলর।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, আওয়ামী লীগ বড় দল। এ কারণে অনেকে সুযোগ-সুবিধা নিতে অনুপ্রবেশ করেছে। তাদের বিষয়ে সতর্ক আছি। কিছু কাউন্সিলরের আচরণে দলের নেতারাও বিব্রত।