রাজধানীর রমনা থানায় করা মানি লন্ডারিং মামলায় ম্যাক্সিম ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মফিজুল হকসহ ২১ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ২৮ কোটি ৬৬ লাখ ১ হাজার ২১৩ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল ঢাকার এক নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা হোসনে আরা এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২১ আসামিকে ৩০০ কোটি ৯৩ লাখ ১২ হাজার ৭৩৯ টাকার দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৬০৩ কোটি ৮৬ হাজার ২৫ হাজার ৪৭৮ টাকা জরিমানা করা হলো। সে হিসাবে ২১ আসামির প্রত্যেককে ২৮ কোটি ৬৬ লাখ ১ হাজার ২১৩ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। দন্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন ম্যাক্সিম ফাইন্যান্সের এমডি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পরিচালক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, খায়রুল বাশার সজল, আবদুল হান্নান সরকার, সৈয়দ শরিফুল ইসলাম, এইচ এম আমিরুল ইসলাম, মো. ওলিয়ার রহমান, ফজলুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান তপন, মোহাম্মদ সোলাইমান সরোয়ার, এম এ সাদী, আসলাম হোসাইন, মেহেদী হাসান মোজাফ্ফর, হারুন আর রশিদ, শেখ আবদুল্লাহ আল মেহেদী, সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম, মনোয়ার হোসেন, ইমতিয়াজ হোসেন কাওসার ও মিজানুর রহমান। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ম্যাক্সিম ফাইন্যান্সের ১১৩টি শাখার মাধ্যমে ১৮ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় ৩০৪ কোটি ১০ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।
এই টাকা ম্যাক্সিম গ্রুপভুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ দেখিয়ে স্থানান্তর, রূপান্তর করে মানি লন্ডারিং করা হয়, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গ্রাহকের আমানতের বিপরীতে প্রতি লাখে মাসে ২ হাজার টাকা ও আদায়কারীকে মাসে ৫০০ টাকা করে কমিশন দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে নতুন গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ পুরনো গ্রাহককে দেওয়া হতো। ম্যাক্সিম ফাইন্যান্স থেকে সংগ্রহ করা অর্থ বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হতো। ম্যাক্সিম ফাইন্যান্সের ১১৩টি শাখা থাকলেও সমবায় অধিদফতর থেকে অনুমতি নেওয়া হয় ২৫টি শাখার। বাকি ৯৮টি শাখার অনুমোদন ছিল না। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ১৯ মে রাজধানীর রমনা থানায় ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক নূর হোসেন খান।