না-ফেরার দেশে চলে গেলেন ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু (৮৭)। গতকাল ভোরে রাজধানীর এ্যাপোলো হসপিটালসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। রওশন আরা বাচ্চুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। গতকাল বিকালে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চুর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তাঁর লাশে শেষ শ্রদ্ধা জানান জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, জাতীয় অধ্যাপক ভাষাসংগ্রামী রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, লোকগবেষক শামসুজ্জামান খান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল, প্রাবন্ধিক মোনায়েম সরকার প্রমুখ। এ ছাড়া সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলা একাডেমি ও লেখিকা সংঘ।
বাংলা একাডেমিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে তাঁর লাশ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। সেখানে প্রথম জানাজার পর লাশ নেওয়া হয় তাঁর পশ্চিম মণিপুরী পাড়ার বাসায়। বাদ মাগরিব সেখানকার বায়তুল আমান জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ (বুধবার) সকালে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার উছলাপাড়া গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বরেণ্য এই ভাষাসৈনিক।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় রওশন আরা বাচ্চু ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। ২১ ফেব্রুয়ারি যেসব ছাত্রনেতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষে ছিলেন, তাঁর অন্যতম ছিলেন তিনি।১৯৩২ সালের ১৭ ডিসেম্বর কুলাউড়া উপজেলার উছলাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন রওশন আরা বাচ্চু। তাঁর বাবার নাম এ এম আরেফ আলী ও মায়ের নাম মনিরুন্নেসা খাতুন।
রওশন আরা বাচ্চু ঢাকার আনন্দময়ী স্কুল, লিটন অ্যাঞ্জেলস, আজিমপুর গার্লস স্কুল, নজরুল একাডেমি, কাকলি হাই স্কুল, আলেমা একাডেমিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। সবশেষে ২০০২ সালে বি এড কলেজের অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।