রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসা নিতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের চিকিৎসাসেবার নামে চলছে চরম অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, হয়রানিসহ নানা দুর্নীতি। প্রায় ২০০ রোগীর জন্য মাত্র একজন এমবিবিএস চিকিৎসককে দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শিশু ও মহিলাদের দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে প্রতিদিন। আর এসবের সুযোগ নিচ্ছে হাসপাতালে গড়ে ওঠা বিশাল দালাল বাহিনী। হাসপাতালে কম মূল্যে চিকিৎসা নিতে এলেও দালালরা নানা অজুহাতে গ্রামের এসব রোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। শুক্রবার সকালে জেলার গঙ্গাচড়া থেকে চিকিৎসা নিতে আসা বৃদ্ধ ওসমান গনি পড়েন দালালের খপ্পরে। তাকে ৫ টাকার টিকিট কিনে এনে দেওয়ার কথা বলে ৫০০ টাকার নোট নিয়ে চম্পট মারেন এক দালাল। হাসপাতালের গেটে হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা গেছে তাকে। এভাবেই প্রতিদিন অসংখ্য রোগী দালালের হাতে প্রতারিত হচ্ছে। দালালদের কাছে জিম্মি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক সদ্য তিনি যোগদান করেছেন জানিয়ে এর বাইরে আর কিছু বলতে রাজি হননি। সরেজমিন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে বিভিন্ন বিভাগে ঘুরে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল নানা অনিয়ম আর হয়রানির অভিযোগ। রোগীর স্বজনরা জানান, শিশু বিভাগের আউটডোরে দায়িত্ব পালন করেন একজন নারী চিকিৎসক যিনি শুধু এমবিবিএস ডিগ্রিধারী। তাকেই সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র দিতে হয়। ফলে তার পক্ষে বিপুলসংখ্যক রোগীকে ভালোভাবে দেখে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শিশু বিভাগের আউটডোরে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন তিনি একজন মেডিকেল অফিসার, তার শিশু রোগ সম্পর্কে কোনো ডিগ্রি নেই। অথচ হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার অনেক চিকিৎসক আছেন তারা কেউই আউটডোরে আসেন না, রোগীও দেখেন না। সার্বিক বিষয়ে জানতে হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান অল্প কিছু দিন হলো এখানে এসেছেন, অনেক সমস্যা আছে, সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করবেন বলে জানান তিনি।