খুলনায় নানা অপরাধে কিশোরদের জড়িয়ে পড়ার প্রবণতায় ফের আতঙ্ক বাড়ছে। গ্রুপ করে বখাটে কিশোররা মাদক সেবন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও খুনের মতো অপরাধে যুক্ত হচ্ছে। গতকাল মহানগরীর চানমারী বাজার এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় মো. আল ফায়েদ (১৭) নামের নবম শ্রেণির স্কুলছাত্র নিহত হলে কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়টি ফের আলোচনায় আসে। একই সময় ছুরিকাঘাতে আহত হয় শুভ (১৮) নামের আরেক স্কুলছাত্র। এলাকায় সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে বিবাদে দফায় দফায় সংঘর্ষে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যায় স্কুলছাত্র মো. আল ফায়েদ চানমারী বাজার এলাকায় সেলুনে চুল কাটাতে গেলে প্রতিপক্ষরা তার ওপর হামলা করে। এ সময় লাঠির আঘাতে আল-ফায়েদ মাথায় গুরুতর জখম ও তার সঙ্গে থাকা শুভ (১৮)-এর দুই পায়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। গুরুতর অবস্থায় তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল সকালে ঢাকায় নেওয়ার পথে আল ফায়েদের মৃত্যু হয়। এদিকে হামলার প্রতিশোধ নিতে গতকাল বেলা ১১টার দিকে শিপইয়ার্ড এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিহত মো. আল ফায়েদ চানমারী এলাকার শওকত আলমের ছেলে। খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বুলবুল বলেন, সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে বিবাদে তুচ্ছ ঘটনায় ১৫/১৬ বছরের কিশোররা এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ১ অক্টোবর নগরীর সোনাডাঙ্গায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শহিদুল ইসলাম রাসেল (১৮) নামে এক যুবক নিহত হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর রূপসা বাগমারা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের গুপ্তির আঘাতে (দুই দিকে ধারালো ছুরি) সারজিল ইসলাম সংগ্রাম (২৬) নিহত ও ২৩ সেপ্টেম্বর নগরীর সোনাডাঙ্গা মজিদ সরণি এলাকায় সুজুকি মোটরসাইকেল শোরুমের সামনে মহিদুল ইসলাম নামে আরেক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে কিশোর অপরাধীরা।
জানা যায়, গত কয়েক মাসে ধর্ষণ, খুন, ব্ল্যাকমেইলিং ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের কয়েকটি ঘটনায় কিশোর অপরাধীদের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানানো হয়েছে। সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রকাশ চন্দ্র অধিকারী বলেন, কিশোররা এখন ছোট অপরাধ থেকে বড় ধরনের সামাজিক অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় সন্তানদের প্রতি অভিভাবকরা নজর রাখতে পারছেন না। এটি কিশোর অপরাধের একটি বড় কারণ।