রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত চ্যালেঞ্জে

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত চ্যালেঞ্জে

চট্টগ্রাম নগরে জেলা প্রশাসনের সাঁড়াশি অভিযানে কাঁচাবাজারগুলোতে করোনার সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের বিষয়টি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে অভিযান চালিয়েও হাট-বাজারগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বরং অভিযান পরিচালনার পর পরই ফের বিক্রেতারা পণ্য নিয়ে আবারও ফিরে আসছেন। ফলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাচ্ছে না। বরং গ্রাম পর্যায়ের হাট-বাজারগুলো নিয়ন্ত্রণ এখন রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসনের কাছে। তবে ইতিমধ্যে কয়েকটি উপজেলায় নিয়মিত হাট-বাজারকে পার্শ¦বর্তী বড় মাঠে স্থানান্তর করে দিয়েছে প্রশাসন। যাতে বিস্তৃত জায়গায় নিরাপদ ব্যবধান বজায় রেখে কেনাকাটা করা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পটিয়া উপজেলার শান্তির হাটে দুই দফা অভিযান চালিয়ে হাট বন্ধ করা হয়। কিন্তু অভিযানের পর আবারও বিক্রেতারা বাজারে ফিরে আসেন। এ নিয়ে বাজার কমিটিকে কারণ দর্শানোর নোটিসও দেওয়া হয়। তাছাড়া উপজেলার বুধপুরা বাজারেও অভিযান পরিচালনা করে বন্ধ করা হয়। কিন্তু পরে আবারও শুরু হয় কেনাকাটা। একইভাবে হাটহাজারী উপজেলার কাটির হাট, সরকার হাট, চৌধুরী হাটসহ একাধিক বাজারে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করা হয়। কিন্তু পরে আবারও শুরু হয় বিকিকিনি। 

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে উপজেলার চারটি বাজারকে বড় মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে ভিড় যাতে না হয় সেজন্য ১০ ফুট অন্তর এবং দোকানের সামনে বৃত্ত এঁকে দেওয়া হয়েছে। সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সাময়িকভাবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। গ্রামের হাট-বাজারগুলো নিয়ন্ত্রণ একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ 

বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আছিয়া খাতুন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে  দুটো বাজারকে বড় মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে। আরও দুটি স্থানান্তর করা হবে। মাঠে ক্রেতারা ফাঁক ফাঁক স্থানে দাঁড়িয়ে বাজার করতে পারবেন। ফলে অন্তত কিছুটা হলেও দূরত্বে থেকে বাজার করা হবে। কারণ গ্রাম পর্যায়ের বাজারগুলো নিয়ন্ত্রণ করাটা কঠিন। তাছাড়া প্রতিটি বাজারে গিয়ে অভিযানও পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। তাই সবার উচিত নিজ থেকে সতর্ক থাকা।’

পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা জাহান উপমা বলেন, ‘পটিয়ায় ইজারা দেওয়া হয়েছে এমন ১৫টি হাট আছে। সবগুলোর কমিটি নিয়ে বৈঠক করে সপ্তাহিক হাট বন্ধ রাখতে বলা হয়। এরপরও কিছু বাজার বসছে। পরে তাদের বাজার বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ জানা যায়, হাটহাজারী পৌরসভার বড় বাজার নেওয়া হয়েছে কলেজ মাঠে, সদরের কাঁচাবাজার নেওয়া হয় পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। আর সরকার হাট কাঁচাবাজার নেওয়া হয় মির্জাপুর স্কুল মাঠে। এ ছাড়া কাটির হাট বাজার নেওয়া হয় কাটির হাট স্কুল মাঠে ও চৌধুরী হাট বাজার বসবে ফতেয়াবাদ স্কুল মাঠে। আর মদনহাট বাজার বসবে নিকটবর্তী স্কুল মাঠে। প্রতিটি দোকান বসানো হয়েছে অন্তত ১০ ফুট দূরত্বে। দোকানের সামনে নির্দিষ্ট দূরত্বে সারি মেনে দাঁড়ানোর জন্য বৃত্ত এঁকে দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বাজার চালু থাকবে। অন্যদিকে, বোয়ালখালী উপজেলায় দুটি বাজারকে পার্শ¦বর্তী বড় মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে। পটিয়ায় সাপ্তাহিক হাটগুলো বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। একইভাবে কর্ণফুলী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, বাঁশখালী, ফটিকছড়িসহ অন্যান্য উপজেলায় বাজার স্থানান্তরের কাজ চলছে বলে জানা যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর