রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

আটকে গেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলের সাড়ে ৮০০ গেটকিপারের বেতন

প্রকল্প পরিচালক বদলি

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের অস্থায়ী ৮৫১ জন গেটকিপার ৩ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। বকেয়া বেতন কবে মিলবে বলতে পারছেন না কেউই। ফলে করোনা পরিস্থিতিতে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। এ নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে তাদের পরিবারগুলোতে। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রকল্প পরিচালক ঢাকায় বদলি হয়ে যাওয়ায় এই জটিলতা হয়েছে। ঝুলে গেছে গেটকিপারদের বেতন। জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চল রেলের লেভেল ক্রসিংসমূহের মানোন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গেটকিপার পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি করেন ৮৫১ জন। ২০১৬ সালে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে তারা পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় দায়িত্বে নিয়োজিত। এতদিন প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরে তাদের বেতন দেওয়া হতো। কিন্তু অন্তত আট মাস আগে রাজশাহী থেকে ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ হিসেবে বদলি হয়ে চলে গেছেন তিনি। এ কারণে তাদের বেতনও বন্ধ। এ বিষয়ে গেটকিপার রুহুল আমিন সবুজ জানান, এর আগে ৬ মাসের বেতন-বোনাস বন্ধ ছিল। ঢাকায় গিয়ে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে সমস্যার কথা তুলে ধরেন গেটকিপাররা। নানা চেষ্টা তদবিরের পর ওই টাকা পান তারা। কিন্তু এবার জানুয়ারি থেকে আবার বেতন বকেয়া পড়েছে। করোনায় সাড়ে ৮০০ গেটকিপার পরিবারের খরচ জোগাতে পারছেন না। খুব অসহায় জীবনযাপন করছেন।

গেটকিপাররা ৩ মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় নিজের ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলের বিভাগীয় এস্টেট অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুজ্জামান। তিনি লিখেছেন, ‘নিম্নআয়ের লোকগুলো সেই জানুয়ারি মাস থেকে ৩-৪ মাস না খেয়ে পরিবার নিয়ে কীভাবে দিন পার করছেন আমরা কি একটু ভেবে দেখতে পারি না? আমরা যারা মাস গেলেই নির্ধারিত তারিখে বেতন পাই, এসব দুর্ভাগা ফ্যামিলিগুলোর কথা ভাবতে কেন ভুলে যাই?’

এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ জানালেন, ফান্ড ছাড় করা আছে ‘অস্থায়ী গেটকিপার প্রকল্পের’ পিডি ও ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মোস্তাফিজুর রহমানের অনুকূলে। উনার কথা মতো ইমেইলে মাস্টাররোলের বিল পেলেই যদি কর্মচারীদের বেতন দেওয়া যায়, তাহলে এতদিন অপেক্ষার কী কারণ ছিল, সেটা বোধগম্য নয়। অনেক কর্মচারী ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের কষ্টের কথা প্রকাশ করেছেন’। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘পাকশী ডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার-২ আবদুর রহীম জানিয়েছেন, তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন; দ্রুতই এটা সমাধান হবে।

চিফ ইঞ্জিনিয়ার মহোদয় এটা সমন্বয় করে দ্রুত সমাধান করবেন বলে আমাকে বলেছেন। কিন্তু এটা তো শুধু করোনার সমস্যা নয়, বাকি ২-৩ মাসে কি এটা সমাধান করা গেল না? একই প্রকল্পভুক্ত পূর্বাঞ্চলের কর্মচারীরা যদি সময়মতো বেতন পান, তাহলে পশ্চিমাঞ্চলের এসব বিপদাপন্ন মানুষগুলো কেন পাবেন না?’

 পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান বলেন, প্রকল্প পরিচালক বদলি হয়ে যায় বেতন প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিয়েছে। তা সমাধানের জন্য এই মুহূর্তে ঢাকাও যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না। তাই বেতন পেতে দেরি হচ্ছে। তবে চেষ্টা চলছে সমাধানের।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর