সোমবার, ২০ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

সিলেটের রাস্তায় জনস্রোত

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটের রাস্তায় জনস্রোত

সিলেট নগরীর টিলাগড় পয়েন্ট। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন নগরীর এক বাসিন্দা। লকডাউনের কারণে পুলিশ তার গাড়ি আটকিয়ে কেন বের হয়েছেন জিজ্ঞেস করে। ওই ব্যক্তি জবাব দেন, ‘ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগছে না। তাই গাড়ি নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছেন।’ গতকাল এ ঘটনাই সিলেটে মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি নির্দেশনা না মানার প্রবণতাকে স্পষ্ট করে দিচ্ছে। এখানকার মানুষ সামাজিক দূরত্ব (সোশ্যাল ডিসটেন্সিং) মানছেন না, সড়কে-বাজারে একসঙ্গে চলাফেরা করছেন। ফলে করোনার সংক্রমণ ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেট জেলায় গতকাল পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে চারজন। এর মধ্যে একজন মারাও গেছেন। বাকি তিনজন আছেন হাসপাতালে। এ তিন ব্যক্তি কীভাবে আক্রান্ত হলেন, তা এখনো জানতে পারেননি স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত দায়িত্বশীলরা। ফলে সিলেটে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে তারা সরকারি নির্দেশনা অনুসারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন জনসাধারণকে। গত ১১ এপ্রিল লকডাউন করা হয় সিলেটকে। কিন্তু ‘আত্মঘাতী’ মানুষ সরকারি নির্দেশনায় কর্ণপাত করছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। সিলেটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দলবেঁধে লোকজন চলাফেরা করছেন। পাড়ার মোড়ে কয়েকজন মিলে আড্ডা দেওয়ার চিত্রও প্রত্যক্ষ করা গেছে। সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশের সদস্যরা যখন টহলে যান, তখন সবাই ঘাপটি মারেন। কিন্তু তারা চলে যাওয়ার পর আগের মতোই যেই-সেই। অনেক এলাকার ভিতরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ওষুধ ও খাবারের দোকান ছাড়াও অন্যান্য দোকানপাট খোলা থাকতে দেখা গেছে। সকাল থেকে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা, কিন্তু সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার প্রবণতা নেই কারও মধ্যে।  সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কালিঘাট এলাকায় রীতিমতো আঁতকে ওঠার মতোই অবস্থা। হাজার হাজার মানুষ গাদাগাদি করে এখানে বাজার-সদাই করছেন প্রতিদিন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাক ভরে এখানে চাল, ডাল, তেল, পিয়াজ, রসুন, আদাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আসে। এসব মালামাল ট্রাক থেকে নামাতে গায়ে গা ঘেঁষে কাজ করেন শ্রমিকরা। ক্রেতাদের ভিড়ও উপচে পড়া। কোথাও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার লেশমাত্র নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে।’ সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জেদান আল মুসা জানান, ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হলে কিংবা সরকারি নির্দেশনা না মানলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর