তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনাভাইরাসের এই কঠিন সংকটকালে সরকারকে একসঙ্গে দুটি বিষয়ে ভাবতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জীবন যেমন রক্ষা করতে হবে, তেমনি জীবিকাও রক্ষা করতে হবে। জীবন এবং জীবিকা দুটি রক্ষাকল্পেই কাজ করছে সরকার। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত ত্রাণ বিষয়ক সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় করোনাভাইরাসের প্রভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম ও অন্যান্য বিষয় সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা সঞ্চালনা করেন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম ও অন্যান্য বিষয় সমন্বয়ে চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক ও সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চৌধুরী, এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ও মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সমন্বয় সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠকে উঠে এসেছে চট্টগ্রাম জেলায় এখনো পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি ঢাকা অঞ্চলের চেয়ে অনেক ভালো আছে। আমরা যাতে এই পরিস্থিতি রক্ষা করতে পারি এবং যারা এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন দ্রুত যাতে তাদেরকে সুস্থ করে তুলতে পারি, সে জন্য কীভাবে করোনা রোগীদের আলাদা করে চিকিৎসা দেওয়া যায়, ভবিষ্যতে রোগী বাড়লে কীভাবে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হবে এবং যারা ভালো আছেন তাদের কীভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়া যায়- সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকারি যথাযথ উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশে একজন মানুষও না খেয়ে মরেনি। অথচ করোনার প্রভাবে আজকে একটি মাস দেশের সব কর্মকা- বন্ধ। আমি বলব- এটাই সরকারের সফলতা।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে ১৭ লাখ টন খাদ্য মজুদ ছিল। করোনা সংকট মোকাবিলায় এর মধ্যে ১ লাখ টন খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৬ লাখ টন খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার গত কয়েক বছর ধরে ৫০ লাখ পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি করে চাল কেজিপ্রতি ১০ টাকায় বছরে ৭ মাস বিতরণ করছে। প্রধানমন্ত্রী আরও ৫০ লাখ পরিবারকে এর আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন। এর মাধ্যমে প্রায় ৫ কোটি মানুষ উপকার পাবে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, পঙ্গু ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ নানা ধরনের ভাতা এবং ১৪৪টি কর্মসূচির মাধ্যমে আরও ১ কোটি মানুষ সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে আছে। প্রায় ৬ কোটি মানুষ- দেশের এক তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে আছে। এটি বিরল।’