করোনা পরিস্থিতিতেও ঢাকাসহ সারা দেশে সাংবাদিক নির্যাতন নিপীড়নের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে। বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল ও মহাসচিব শাবান মাহমুদ বিবৃতিতে শফিকুল ইসলাম কাজলসহ গ্রেফতার হওয়া সাংবাদিকদের অবিলম্বে মুক্তিসহ মামলা-হামলা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে চোর ডাকাতের মতো পিঠমোড়া করে বেঁধে আনা হয়েছে। এটি দেখে যে কোনো সভ্য সমাজের মানুষের মাথা লজ্জায় ও প্রচÐ ঘৃণায় হেঁট হয়ে যাবে। নেতারা বলেন, পুলিশ আইনানুগভাবে নিরপেক্ষ হয়ে দায়িত্ব পালন করবে এটাই কাম্য। কিন্তু কাজলের প্রতি পুলিশের আচরণ দেখে মনে হয় কাজল যেন পুলিশের শত্রু বা প্রতিপক্ষ।
বিশ্ব মুক্তগণমাধ্যম দিবসে কাজলের প্রতি পুলিশের এই আচরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেশ বিদেশের বিবেকবান মানুষ তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা জানিয়েছেন।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, ২০১৮ সাল থেকে গত এপ্রিল পর্যন্ত দেশে ১৮০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও ৫৭ ধারায় মামলা হয়েছে। এসব মামলায় সাংবাদিকদের যে প্রক্রিয়ায় গ্রেফতার ও নির্যাতন করা হয়েছে তা ন্যায় বিচারের অবমাননা।তারা বলেন, কাজল ছাড়াও ঢাকায় জাগো নিউজ এবং বিডিনিউজের সম্পাদকের বিরুদ্ধে তুচ্ছ বিষয়ে মামলা দায়ের, নরসিংদীতে তিন সাংবাদিককে গ্রেফতার এবং সর্বশেষ সিলেটে একটি পত্রিকার সম্পাদক মাহতাবকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এসব তুচ্ছ ঘটনার মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং বিশেষ ব্যবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে নিষ্পত্তির দাবি জানান বিএফইউজের নেতারা।
নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সাবেক ছাত্রনেতারা : সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সাবেক ছাত্রনেতারা। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই মুক্তি চাওয়া হয়।
নেতারা বলেন, কাজল সৎ ও সাহসী সাংবাদিক। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে করা গণআদালতে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এ ছাড়া ওয়ান-ইলেভেনের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দুর্লভ সব ছবি ক্যামেরাবন্দী করেন।
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে হয়রানি না করে দ্রুত মুক্তি দিয়ে সরকার ও রাষ্ট্র দায়িত্বশীল আচরণ করবে বলে প্রত্যাশা করেন নেতারা।