করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন সরকারি ছুটি থাকার পর রবিবার শুরু হয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। করোনার আতঙ্ক নিয়েই চট্টগ্রামে অফিস করছেন চাকুরেরা। সবাই ব্যবহার করছেন মাস্ক, হ্যান্ডস্যানিটাইজারসহ জীবাণুনাশক সামগ্রী। অফিসে নেই সেবাপ্রার্থী-দর্শনার্থী ও দালালদের অবাধ বিচরণ। দূরত্ব বজায় রেখেই বসানো হয়েছে টেবিল-চেয়ার। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিও সীমিত করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, নিজেদেরই সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বড়জোর মাস্ক আর হ্যান্ডগ্লাভস ব্যবহার করতে পারি। সেগুলো দিয়ে নিজেকে করোনা থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারব? বাস পুরোপুরি চলছে না। অফিসে আসতে অনেক সহকর্মীকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তিনি বলেন, সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর তো গাড়ি নেই। অনেকে শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অফিসে আসেন। তাদের কিছুটা কষ্ট হয়েছে। রিকশায় আসার মধ্যেও ঝুঁকি আছে। অনেক রিকশাচালকের মুখে মাস্ক নেই। অনেকে রিকশায় উঠছেন মাস্ক ছাড়াই। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, সরকারি স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে অফিসের কাজকর্ম শুরু হয়েছে। সরকারি সেই নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। প্রতিটি অফিস কক্ষে হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও কর্মরতদের জন্য মাস্ক ব্যবহার এক প্রকার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বোর্ডের গেটে প্রবেশ বা বের হওয়ার সময় দেওয়া হচ্ছে হ্যান্ডওয়াশ। সাক্ষাৎ বা জরুরি প্রয়োজনে করা হয়েছে বিশেষ নির্দেশনাও। তবে বোর্ডের প্রতিটি তলায় বা স্থরে জীবাণুমুক্ত পরিবেশ রাখার জন্য নির্দেশনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, বন্দরের বয়স্ক ও অসুস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে আসতে নিষেধ করেছি। তবে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। সরেজমিন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কার্যালয়ে দেখা গেছে, প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর টেবিলের মধ্যে অন্তত তিন ফুট ফারাক রাখা হয়েছে। টেবিলের সামনে চেয়ারও রাখা হয়েছে দূরত্ব মেনে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিআরবি ভবনের মূল ফটক। পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অফিস, জিআরপি থানাসহ সবখানেই দূরত্ব বজায় রেখেই কাজ করছেন সবাই। ট্রেন চলাচলে দূরত্ব বজায় রেখেই যাত্রীরা ভ্রমণ করছেন। এতে নানাবিধ সমস্যা এড়াতে কঠোর মনিটরিং করছেন রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
যাত্রীদেরও ট্রেনে বসানো হয়েছে নির্দিষ্ট দূরত্বে এবং সবার মুখে মাস্ক ছিল। কেউ কেউ হ্যান্ডস্যানিটাইজার নিয়েই ট্রেনে ওঠেন। ট্রেন ছাড়ার আগে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। অন্য অফিসগুলোরও একই পরিবেশ।