সিলেটে বেড়েই চলছে করোনা উপসর্গ ও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোগীতে ভরে গেছে সিলেট বিভাগের একমাত্র করোনা হাসপাতাল শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালও। বেসরকারি দুটি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা শুরু হলেও তা ব্যয়বহুল হওয়ায় সবার পক্ষে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় সিলেটে এক হাজার শয্যার একটি আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আরও দুটি সরকারি হাসপাতালেও আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনটি সেন্টারেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীরা আর্থিক সহায়তা করবেন বলে জানা গেছে। করোনা সংক্রমণের শুরুতে সিলেটে চিকিৎসার জন্য তিনটি সরকারি হাসপাতাল নির্ধারণ করা হলেও আইসিইউ সুবিধাসহ ১০০ শয্যার শামসুদ্দিন হাসপাতালেই চালু করা হয় সেবা কার্যক্রম। সেন্ট্রাল অক্সিজেন ও পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ও খাদিম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী ভর্তি থেকে বিরত থাকেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু রোগী বেড়ে যাওয়ায় শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের পাশাপাশি করোনা ডেডিকেটেড নতুন হাসপাতালের প্রয়োজন দেখা দেয়। এই অবস্থায় এগিয়ে আসেন সিলেটের প্রবাসীরা। প্রবাসীদের অর্থায়নে পরিচালিত সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশন এগিয়ে আসে দুটি আইসোলেশন স্থাপনে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় তারা ৩১ শয্যার খাদিম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ৫০ শয্যার দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন সেবা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। দুটি হাসপাতাল পরিচালনার জন্য তারা জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে। এদিকে, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় একটি বৃহৎ আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। সিলেট নগরীর মাছিমপুরস্থ আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে একহাজার শয্যার এই আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতরে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। ওই প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে এক হাজার শয্যার একটি আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে। পর্যাপ্ত জায়গার পাশাপাশি কমপ্লেক্সে ২৫টি বাথরুমও রয়েছে। জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে, আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে এক হাজার শয্যার আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে থাকা সিলেটের প্রবাসীরা তাতে অর্থায়ন করবেন। এরকম প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন প্রবাসীরা। এ ছাড়া অবকাঠামো প্রস্তুত থাকায় ক্রীড়া কমপ্লেক্সে আইসোলেশন স্থাপনের কাজেও বেশি সময় লাগবে না। এক সঙ্গে একহাজার শয্যার আইসোলেশন সেন্টার হলে এক ছাদের নিচে অধিক সংখ্যক রোগীকে সেবা দেওয়া যাবে বলেও জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, ‘আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনে প্রবাসীরা অর্থায়নে আগ্রহী বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। একসঙ্গে বড় একটি আইসোলেশন সেন্টার করা গেলে সিলেটে করোনা চিকিৎসার সংকট মোটামুটি কেটে যাবে।’