মঙ্গলবার, ৩০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

কোরবানির বাজার নিয়ে শঙ্কা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

কোরবানির বাজার নিয়ে শঙ্কা

করোনা পরিস্থিতির কারণে আসন্ন কোরবানির ঈদও চট্টগ্রামে আমেজহীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগে রমজানের ঈদে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও কোনো ধরনের দৃশ্যমান আমেজ ছিল না। করোনার প্রার্দুভাব দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে এবার কোরবানির ঈদও হতে পারে সীমিত পরিসরে। তাছাড়া কোরবানি করা না করা নিয়ে ক্রেতাদের মাঝে এবং আগের মতো বাজারে তেমন গরু, মহিষ, ছাগল বিক্রি হবে কিনা তা নিয়ে নানাবিধ শঙ্কায় বিক্রেতারা। তবে নানা সংকটের মধ্যেও গত বছরের মতোই চট্টগ্রামে পশু জবেহ হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জেলা প্রাণিসম্পদের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম মহানগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী নেতা মোজাম্মেল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আর্থিক সংকটসহ ব্যবসায় সমস্যা হচ্ছে করোনা পরিস্থিতির কারণে। লোকসানও করেছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী। রমজানের ঈদে অনেকেই নিজ বাড়িতে ঈদও করতে যাননি। সেই হিসেবে এবার কোরবানির ঈদও আগের বছরের তুলনায় বাজেট কমিয়ে পশু কোরবানি দেবেন অধিকাংশ ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। আবার সাধারণ মানুষের অনেকেই ব্যাপক আর্থিক সংকটে পশু কোরবানি নাও করতে পারেন। শুলকবহর এলাকার বাসিন্দা ও রিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান নঈনুদ্দিন কাদের লাভলু বলেন, গতবারের তুলনায় এবার পশুর হাট তেমন জমজমাট হবে না। ক্রেতাও তেমন দেখা যাবে না। কোরবানি ঘনিয়ে এলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে তেমন দৃশমান আমেজ নেই বললেই বলে। দেড়-দুই মাস আগে থেকে চট্টগ্রাম নগরীর সেই বিবিরহাট ও সাগরিকা গরুর বাজারে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষণীয় থাকে। সেই ভিড় বা তেমন বাজারও নেই এখন। তবে এবার আগের তুলনায় প্রতিটি পশুর দাম কমিয়ে না আনলে কোরবানি করা কঠিন হবে অনেকেরই। চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রেয়াজুল হক জসিম বলেন, গত বছর ৭ লাখ ২০ হাজার ৭৮৯টি পশু জবেহ করা হয়েছে কোরবানিতে। আশা করা হচ্ছে এবারও সমসংখ্যক পশু জবেহ করা হবে। এবার ৬ লাখের বেশি পশু স্থানীয়ভাবে লালন-পালন করা হয়েছে। নানা সংকটের মধ্যে পশুর বাজার ঠিক থাকবে। এতে সবমিলে কোরবানিতে পশুর সংকট হবে না বলে জানান তিনি। রাউজানের গরু ব্যবসায়ী নাসিম বলেন, এবার কোরবানিতে হাট-বাজারে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করবে না ক্রেতা। পাড়াগাঁ বা খামার থেকে কেনার আগ্রহ বেশি থাকবে। খামারে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে। ইতিমধ্যেই অনলাইনে অনেকে সাড়া দিয়েছেন। খামারে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনেই কোরবানির পশু বিক্রি করা হবে। একই কথা বললেন নগরীর গরু ব্যবসায়ী দেলোয়ারও।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, প্রতি বছর নিজ গ্রামের বাড়িতেই ঈদ করে আসছি। এবার করোনার কারণে সম্ভব হয়নি। কোরবানির  ঈদেও তেমন আমেজ নেই। তিন মাসের লকডাউনে দেশের অর্থনীনৈতিক অবস্থাও ভালো নেই। ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকানপাট বন্ধ ও বেসরকারি চাকরিজীবীসহ বিপুলসংখ্যক লোক কর্মহীন। কষ্টে দিনযাপন করছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ।

রাঙ্গুনীয়ার বাসিন্দা ও শাহ আমানত সিটি করপোরেশন মাকের্টের ব্যবসায়ী আবুল মুনছুর চৌধুরী বলেন, এবারের পরিস্থিতির কারণে হাট-বাজার নিরাপদ মনে করছি না। মনে হচ্ছে পাড়াগাঁয়ে ভালো গরু বেচাকেনা হবে। তারপরও পরিস্থিতি অনুধাবন করে কোরবানি ঘনিয়ে এলে চিন্তা-ভাবনা করবেন বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর