শুক্রবার, ২৪ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
পুরান ঢাকায় গ্যাসলাইনে বিস্ফোরণ

ঘুমের মধ্যেই দেয়ালচাপায় মারা গেল শিশুটি, দগ্ধ ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার বংশালে একটি বাড়িতে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে দেয়ালধসে মইনুল ইসলাম (৩) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণের আগুনে শিশুটির বাবা জাবেদ (৩৫), মা শিউলি আক্তার (২৫) এবং বোন জান্নাতুল ইসলাম (৫) দগ্ধ হয়েছেন। তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল সকালে বংশালের ৪৪/১ সামসাবাদ লেনে এ ঘটনা ঘটে। বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানান, শিশু জান্নাতের শরীরের ৬০ শতাংশ, তার বাবার ৩৭ শতাংশ ও মায়ের ১৭ শতাংশ পুড়ে গেছে। সবারই শ্বাসনালি দগ্ধ হয়েছে। জান্নাত ও তার বাবা জাবেদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দগ্ধ জাবেদের ফুফু শিউলী বেগম জানান, জাবেদ তার স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে বংশালের ওই বাড়ির নিচতলায় থাকেন। তিনি ও তার স্ত্রী স্কুলব্যাগ তৈরির কাজ করেন। ঘটনার সময় ঘরে তারা সবাই ঘুমিয়েছিলেন। জাবেদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানার আড়াইশিতা লাওয়াশ্বরে। জাবেদের বাবা ও ছোট ভাই নাইমও তাদের সঙ্গে থাকেন। তবে ঘটনার সময় তারা বাসায় না থাকায় বেঁচে গেছেন। স্থানীয়রা জানান, সকাল সোয়া ৮টার দিকে বাড়িটির নিচতলার দেয়ালধসে পড়ার শব্দ পান। ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা দেখতে পান, নিচতলার দুটি কক্ষের দেয়ালধসে পড়েছে। তখন কক্ষ দুটিতে আগুন জ্বলছিল। উপস্থিত লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে আগুন নিভিয়ে জাবেদ, শিউলি ও জান্নাতকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা এসে পুরোপুরি আগুন নিভিয়ে শিশু মইনুলের মরদেহ উদ্ধার করে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা লিমা খানম জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে আমাদের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়।

এ সময় ধসে পড়া দেয়ালের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাসলাইনে লিকেজ ছিল। সেই লিকেজ থেকে আগুন ধরলে গ্যাসলাইনে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ওই ভবনের নিচতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া একই লাইনে থাকা আশপাশের বাসার গ্যাসের পাইপ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পাশের তিনটি কাগজের গুদাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির বলেন, সকালে বিকট শব্দে ওই বাসায় গ্যাস বিস্ফোরণ হয়। এতে বাসাটির এক পাশের দেয়াল ধসে পড়ে। এর নিচে চাপা পড়ে শিশুটি মারা যায়। দগ্ধ হয় শিশুটির বাবা, মা ও বোন। ওই বাসার গ্যাস সরবরাহে সমস্যা ছিল বলে জানতে পেরেছি। গত বুধবারও গ্যাসের লাইন মেরামত করা হয়। আগেও একবার ঠিক করা হয়েছিল। গতকাল পর্যন্ত সেখানে গ্যাসের কাজ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাসের লিকেজ থাকায় রুমের ভিতর গ্যাস জমে ছিল। যার কারণে হয়তো চুলা বা আগুন জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর