আগামী ১ আগস্ট ঈদুল আজহা। কোরবানি সামনে রেখে শুরু হয়েছে পশুর হাট। বাজারে এ নিয়ে বাড়বে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। চ্যালেঞ্জে আছে পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা। এরপর বাড়ি ফেরা, কোরবানিতে স্বজনদের বাড়িতে যাতায়াত, ঈদ-পরবর্তী কর্মস্থলে ফেরা- এসব কর্মযজ্ঞে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানা ব্যাপক চ্যালেঞ্জের। ফলে কোরবানির আগে ২৭ জুলাই থেকে এবং পরে ৮ আগস্ট পর্যন্ত ১৩ দিন করোনা সংক্রমণ ঝুঁকিতে আছে- সংশ্লিষ্টদের অভিমত। এ সময় করোনা আক্রান্ত উপসর্গহীন অনেক মানুষও গ্রাম-শহরে যাতায়াত করবেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোরবানিকে কেন্দ্র করে কয়েকটি বিষয় সামনে আসে। এর মধ্যে আছে, কোরবানির পশুর হাট। এসব হাটে থাকে উপচে পড়া ভিড়। ভিড়ের মধ্যে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে পশু বাছাই ও দরদাম করা হয়। এ সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কেনাবেচা অনেকটাই অসম্ভব। তাছাড়া পশু জবাই, মাংস প্রক্রিয়াকরণ, বিলিবণ্টন এবং কোরবানির সময় আত্মীয়স্বজনরা পরস্পরের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া- এসব কাজে সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ছে। অন্যদিকে ঈদের ছুটিতে অসংখ্য মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে যাওয়া এবং ঈদের ছুটি শেষে সবাই আবার কর্মস্থলে ফেরার সময়ও সংক্রমণ ঝুঁকি এড়ানো প্রায় অসম্ভব। জনস্বাস্থ্যবিদরা মনে করেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি।
অন্যদিকে ইরান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়ায় সংক্রমণ কমে এসেছিল। কিছুদিন পর আবার সংক্রমণ বেড়ে যেতে দেখা যায়। ফলে সংক্রমণ কমছে মনে করে আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো কারণ নেই। তাই প্রতিরোধ কাজ জোরালো ও অব্যাহত রাখা জরুরি।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘কোরবানির সময়টা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জের। পশুর হাট, কোরবানির আগে বাড়ি ফেরা, পরে কর্মস্থলে পাড়ি- এসব সংক্রমণের বড় ঝুঁকি। তাই সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।’চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘পশু ক্রয়, জবাই, মাংস প্রক্রিয়াকরণ, গরিব ও আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিতরণ, বাড়ি ফেরা এবং পরে কর্মস্থলে ফেরা- এসব কিছুই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ফলে সবাইকে সর্বোচ্চ সচেতন থাকতে হবে।’
জানা যায়, কোরবানিতে চট্টগ্রাম নগরে স্থায়ী তিনটি ও অস্থায়ী চারটি পশুর বাজার বসছে। স্থায়ী বাজারগুলো হলো সাগরিকা পশুর বাজার, বিবিরহাট গরুর হাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার। অস্থায়ী চারটি হলো- কমল মহাজন হাট, সল্টগোলা গরুর বাজার, বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণের খালি মাঠ এবং কর্ণফুলি পশুর বাজার। তাছাড়া ১৫ উপজেলায় স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় পৌরসভার তত্ত্বাবধানে স্থায়ী-অস্থায়ী ২২৫টি পশুর হাট বসছে। তবে এর বাইরেও স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির উদ্যোগে বিভিন্ন মাঠে-ময়দানে ছোট ছোট পশুর হাট বসানো হচ্ছে।