খুলনায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ছিনিয়ে নিতে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। গত এক সপ্তাহে দুই ইজিবাইক চালকের লাশ উদ্ধারের পর রীতিমতো আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। খুলনার আড়ংঘাটা বাইপাস, মোস্তর মোড়, দৌলতপুর ও শেখপাড়া এলাকায় ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। জানা যায়, ভাড়া করা ইজিবাইকটি অপেক্ষাকৃত নির্জন এলাকায় নিয়ে তার চালককে হত্যা বা আহত করে গাড়িটি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তারপর নির্দিষ্ট কিছু দোকানে এসব গাড়ি বিক্রি করা হয়। তারা গাড়িটি ভেঙে আলাদাভাবে ব্যাটারি ও বাকি অংশ লোহার ওজনে বিক্রি করে। পুলিশ জানায়, ৬ আগস্ট নগরীর হরিণটানা বাইবাস থেকে টুটুল মোল্লা নামের এক ইজিবাইক চালককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। একইভাবে ১০ আগস্ট লবণচরা সুড়িখাল এলাকা থেকে রাজু আহমেদ নামের ইজিবাইক চালকের লাশ উদ্ধার হয়। এছাড়া আড়ংঘাটা বাইপাস থেকে মো. কামরুল ইসলাম নামে আরেকজন ইজিবাইক চালককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তার গলায় ফাঁস ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্রের আঘাত করে ইজিবাইক ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। হরিণটানা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রাসেল হোসাইন জানান, ইজিবাইক চালক টুটুল হত্যাকাণ্ডে নগরীর খালিশপুর ও বাগেরহাট সদরের লিচুতলা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই গাড়িটি যে কিনেছে তাকে আটকের পর হত্যাকারীদের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে লবণচরা এলাকায় রাজু আহমেদ হত্যাকাে এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি।
এদিকে ছিনতাইকারী চক্রের হাতে জখম ইজিবাইক চালক কামরুল ইসলাম জানান, নগরীর বয়রা মোড় থেকে সোনাডাঙ্গা মজিদ সরণিতে এসে এক যাত্রী ইজিবাইক থেকে নেমে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মাইক্রোবাসে ওঠে। তাকে ভাড়া দিতে বললে তিনি মাইক্রোবাসের গেটের কাছে গেলে ধাক্কা দিয়ে তাকে ওই গাড়িতে ওঠানো হয়। এরপর তার গলায় ফাঁস লাগিয়ে, দুই পায়ের বিভিন্ন স্থানে লোহার যন্ত্রাংশ দিয়ে আঘাত করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় আড়ংঘাটা বাইপাসের কাছে ফেলে দেওয়া হয়। তার ছিনতাই হওয়া ইজিবাইকটি মাত্র ২১ দিন আগে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিলেন।
লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সমির কুমার সরকার বলেন, ইজিবাইক চালক রাজু হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ছিনতাইয়ের পর এসব গাড়ি যেসব স্থানে বিক্রি করা হয়, সেখানে ক্রেতা ও ছিনতাই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে।