রাজশাহী মহানগরীর আলিফ-লাম-মিম ভাটা এলাকায় নতুন নির্মাণাধীন বাইপাস সড়কের প্রবেশমুখে অবশেষে পুনঃস্থাপন করা হচ্ছে এফ-৬ মডেলের যুদ্ধবিমান। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বৃহস্পতিবার রাতেই বিশেষ ক্রেনের সাহায্যে যুদ্ধবিমানটি বসানো হয় নির্মিত স্ট্যান্ডের ওপর। এখন আলোকায়নসহ বিউটিফিকেশনের কাজ হলেই সৌন্দর্যবর্ধন করবে যুদ্ধবিমানটি। গত বছর নভেম্বর মাসে যুদ্ধবিমানটি নগরীর সিঅ্যান্ডবির মোড় থেকে নামিয়ে আলিফ-লাম-মিম ভাটা এলাকায় নিয়ে আসা হয়। এরপর দীর্ঘ আট মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধবিমানটি নির্মাণাধীন সড়কের ওপর কাদামাটিতে পড়ে ছিল। শেষ পর্যন্ত প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে রং করে এবং বিভিন্ন অংশ জোড়া দিয়ে বিমানটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে বিমানবাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘বাবুই’ আর্কিটেকচারের ২১ সদস্যের দল যুদ্ধবিমানটি বসানোর কাজ সম্পন্ন করছে। তাদের সঙ্গে যশোর থেকে আসা বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।

এস এম কুতুব উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে যুদ্ধবিমানটি স্ট্যান্ডের ওপর তুলে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশন কাজটির মেয়াদ বাড়ালে আলিফ-লাম-মিম ভাটা এলাকার এই চত্বরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু করা হবে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী খন্দকার খায়রুল বাশার বলেন, সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে কাজটি চলছে এটা ঠিক, তবে তিনি নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন, তাই বিষয়টি পুরোপুরি তার জানা নেই। ঠিকাদার চিঠি দিয়ে থাকলে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান প্রধান প্রকৌশলী।

নগরীর রাজশাহী-নওগাঁ থেকে মোহনপুর, রাজশাহী-নাটোর সড়কের প্রবেশমুখেই বসানো হলো যুদ্ধবিমানটি। আর এর মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ দুই যুগ পর জায়গা বদল করে নতুন ঠিকানা পাচ্ছে এফ-৬ মডেলের যুদ্ধবিমানটি। বিমানবাহিনীর দেওয়া এ যুদ্ধবিমানটি গত টানা ২৫ বছর মহানগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ের ঐতিহ্য হয়ে ছিল।

নতুন সড়কটি রাজশাহীর শাহ মখদুম (রহ.) বিমানবন্দর সড়কে গিয়ে মিলিত হয়েছে। দুই সড়কের সংযোগস্থল থেকে এফ-৬ মডেলের ‘যুদ্ধবিমান’ নির্দেশনা দেবে ‘বিমানবন্দরের’ দিকে। এটি হবে নতুন সড়কের মূল আকর্ষণ।

এর আগে গত বছর ২৬ নভেম্বর সকালে যুদ্ধবিমানটি সিঅ্যান্ডবি মোড়ের নির্ধারিত স্ট্যান্ড থেকে নামানোর কাজ শুরু হয়। স্থানান্তর কার্যক্রম পরিচালনার সময় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার কাজী শাহজাহান জানান, স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের আকাশসীমার সুরক্ষায় এফ-৬ মডেলের যুদ্ধবিমানটি কেনা হয়েছিল। বিমানটি ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সার্ভিস দিয়েছে। পরে শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য রাজশাহী সিটি করপোরেশন একটি অব্যবহৃত বিমান সিঅ্যান্ডবি মোড়ে স্থাপনের আবেদন জানায়। অনুমোদনের পর ১৯৯৪ সালে রাজশাহী সিঅ্যান্ডবি মোড়ে কংক্রিটের তৈরি স্ট্যান্ডের ওপর এ বিমানটি স্থাপন করে সিটি করপোরেশন।

যুদ্ধবিমানটি অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি। এ মডেলের বিমানের ইঞ্জিন সাধারণত ভিতরেই থাকে। তবে এটিতে ইঞ্জিন নেই। কিন্তু এখনো দুই পাখার সঙ্গে ড্রপট্যাঙ্ক আছে। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে যুদ্ধবিমানটি মডেল হিসেবে রূপ দেওয়া হলেও এর পাইলটের বসার স্থানটি ঠিক রাখা হয়।