মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

রেলপথে পণ্য আমদানিতে আগ্রহী ব্যবসায়ীরা

করোনাকালে ট্রেনে এসেছে ৮০ হাজার মেট্রিক টন পণ্য

বকুল মাহবুব, বেনাপোল (যশোর)

বেনাপোল বন্দরে জায়গা সংকট দীর্ঘদিনের। ব্যবসায়ীরা বন্দরের জায়গা বাড়ানোর দাবি করে আসছে বহু বছর ধরে। ব্যবসায়ীদের দাবির প্রতি কর্ণপাত না গোঁজামিল দিয়ে বন্দরের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ফলে পণ্যজট লেগেই আছে বেনাপোল স্থলবন্দরে। জায়গার অভাবে আমদানিকৃত পণ্য রাখা যাচ্ছে না। সে কারণে বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোলে কয়েক হাজার পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায়। ভারতীয় ট্রাক ডেমারেজ বাবদ আমদানিকারকদের গুনতে হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। নষ্ট হচ্ছে পণ্যের গুণগত মান। তবে এবার আমদানিকারকদের আশার আলো দেখাচ্ছে রেলপথে পণ্য পরিবহন। ৫০ দিনে রেলপথে বেনাপোল বন্দরে এসেছে প্রায় ৮০ হাজার টন পণ্য। পণ্যজট এড়িয়ে সহজে রেলপথে আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় একদিকে যেমন ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে, অন্যদিকে এ খাত থেকে রেলের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বেনাপোল স্থলবন্দরের ওপর চাপ কমে আসবে। ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে নতুন গতি আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। করোনা মহামারীর সংক্রমণ রোধে ২২ মার্চ রেল ও স্থলপথে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় ভারত।

 হঠাৎ বাণিজ্য বন্ধের ফলে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের হাজার হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়ে। পরবর্তী সময়ে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি সচল হলেও এ পথে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সচলে নানা প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির বিষয়টি উভয় দেশের বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানান। এতেও সচল হয়নি বাণিজ্য। একপর্যায়ে রেল কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস, বন্দর ও ব্যবসায়ীদের যৌথ উদ্যোগে বিকল্পভাবে বাণিজ্য সচল করতে রেলপথে পার্সেল ভ্যানে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-বাণিজ্য চুক্তি হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে স্থলপথের পাশাপাশি রেলপথে কার্গো রেল, সাইডডোর কার্গো রেল এবং পার্সেল ভ্যানে সব ধরনের পণ্যের আমদানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের যেমন দুর্ভোগ কমেছে, তেমনি বাণিজ্যে গতি বেড়ে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, করোনার অজুহাত দেখিয়ে ভারতের পেট্রাপোলের একশ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে মাসের পর মাস ট্রাক আটকে রেখে ফায়দা লুটছিলেন। এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে শুরু হয় রেলপথে আমদানি বাণিজ্য। এভাবে চলতে থাকলে আশা করা যাচ্ছে চলতি অর্থবছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আসবে।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আবদুল জলিল বলেন, করোনার মধ্যে ভারত অংশের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে নানাভাবে বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্য সচল করতে রেলপথে সব ধরনের পণ্য আমদানির পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আগে মালবাহী রেল ওয়াগনে চাল, গম, পাথর, পিয়াজসহ কয়েকটি পণ্য আমদানি হতো। সেসব পণ্য যশোরের নওয়াপাড়ায় গিয়ে খালাস করতে হতো। এখন রেল ওয়াগন, পার্সেল ভ্যান ও সাইড ডোর কার্গো রেলে সব ধরনের পণ্য আমদানি হচ্ছে। সেই পণ্য বেনাপোল বন্দরে খালাস করা হচ্ছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর