শুক্রবার, ২৮ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

নড়বড়ে বেড়িবাঁধে থমকে গেছে গ্রামীণ অর্থনীতি

খুলনা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বেড়িবাঁধ ভাঙনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুলনার উপকূলীয় গ্রামীণ অর্থনীতিতে। গত কয়েক দিনের অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে পাইকগাছা ও কয়রার বেশির ভাগ চিংড়ি ঘের। নষ্ট হয়েছে বসতবাড়ি, খেতের ফসল। বিশ্লেষকরা বলছেন, কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রথম ধাক্কাটা এসে পড়ে প্রান্তিক চাষিদের ওপর। একবার লবণপানিতে তলিয়ে গেলে পাঁচ-সাত বছরের আগে কৃষি আর আগের অবস্থায় ফিরে যায় না। ফলে দুর্যোগ মোকাবিলায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে পারলে লাভবান হবেন প্রান্তিক চাষিরা। খুলনার পাইকগাছার সোলাদানা এলাকার কৃষক মিরাজুল শেখ। পরের জমি লিজ নিয়ে চিংড়ি চাষ করেন। করোনার কারণে এমনিতে চার মাস আয়-রোজগার বন্ধ। তার ওপর গত সপ্তাহে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে তার চিংড়ি ঘের। গ্রামে মিরাজুল একা নন, জোয়ারের পানিতে মাছের ঘের, খেতের ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুশীলনের নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা নুরুজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বেড়িবাঁধ ভাঙনে উপকূলের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি ধসে পড়েছে। চলতি বছরেই কয়েকটি দুর্যোগে সব মিলিয়ে ক্ষতি শত কোটি টাকার ওপর। পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে যাওয়ায় বাঁধ উপচে লবণপানি লোকালয়ে ঢুকেছে। এতে কৃষি ও মাছের ঘের ভেসে গেছে, চরম দুর্দশায় পড়েছে কৃষক।

 এদিকে উপকূলীয় এলাকার জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করাই এখন অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস। তিনি বলেন, এখানে জীবন-জীবিকায় বারবার আঘাত হেনেছে সিডর, আইলা, ফণী, আম্ফানের মতো ঘূর্ণিঝড়। সর্বশেষ অস্বাভাবিক জোয়ারে চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে, ক্ষতি হয়েছে কোটি টাকার। ফলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের বিকল্প নেই। পাউবো-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি জানান, পানি নেমে গেলে দ্রুত বাঁধ সংস্কার করা হবে। ডেল্টা প্ল্যানের আওতায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর