পদ্মার প্রবল স্রোতের তোড়ে সরে যাচ্ছিল রাজশাহী শহর রক্ষাবাঁধের সিসি ব্লক। সেজন্য তড়িঘড়ি করে জিও ব্যাগ ফেলে ফাটল ঠেকানো হয়েছে। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলছেন, এখনই আতঙ্কের কিছু নেই। তারা ২৪ ঘণ্টাই পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন। পানি কমে গেলে বা বেড়ে গেলে আবারও বাঁধে ফাটল দেখা দিতে পারে। তাই তারা পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তুত আছেন। ২০১৬ সালেও শহর রক্ষাবাঁধের তিন মিটার এলাকাজুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছিল। সেবারও জিও ব্যাগ ফেলে ফাটল রোধ করেছিল রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড। এভাবে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই ঝুঁকিতে পড়ে শহর রক্ষাবাঁধ। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে বাঁধটির স্থায়ী বন্দোবস্ত বা কার্যকর সংস্কারের উদ্যোগ নেয় না পাউবো। বারবার জিও ব্যাগ ফেলেই রাজশাহী শহর রক্ষাবাঁধের ধস ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়। এদিকে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে কখনো পানি বাড়ছে আবার কখনো কমছে। পানিপ্রবাহ কোনোভাবেই স্থিতিশীল পর্যায়ে থাকছে না। গত ১০ দিন থেকে এ অবস্থা চলছে। রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা বর্তমানে ১৫ থেকে ১৬ দশমিক ৬৭ মিটারের মধ্যেই ওঠানামা করছে। রাজশাহীতে পদ্মার বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। ফলে বিপৎসীমার মাত্র ১ দশমিক ৮৩ মিটার নিচ দিয়ে রাজশাহীতে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মা।
এর মধ্যেই শ্রীরামপুর পুলিশ লাইনের সামনে টি-গ্রোয়েনের পাশে শহর রক্ষাবাঁধের ফাটল ঠেকাতে পদ্মা নদীতে ফেলা হয়েছে বালুভর্তি জিও ব্যাগ। তবে বাঁধ এলাকায় জনসাধারণের চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। তাই বাঁধের ফাটল ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও আবার ধস নামার আশঙ্কা করছেন নদী তীরবর্তী মানুষ।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার এনামুল হক জানান, রাজশাহী পয়েন্টে শনিবার দুপুর ১২টায় পানির উচ্চতা মাপা হয়েছে ১৬ দশমিক ৫৬ মিটার। ভাদ্র মাসে পানি বাড়ে। এখন পদ্মার পানি স্থিতিশীল অবস্থায় নেই। কখনো বাড়ছে আবার কখনো কমছে। তবে পানির উচ্চতা ১৫ থেকে ১৬ দশমিক ৬৭ মিটারের মধ্যেই ওঠানামা করছে। এর চেয়ে বাড়ছে না।রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুব রাসেল বলেন, স্রোতের তোড়ে নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় শহর রক্ষাবাঁধের ওপরে থাকা সিসি ব্লকগুলো ফাঁকা হয়ে যাচ্ছিল। তাই জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। প্রথমে বাঁধের নিচে জিও ব্যাগ ফেলে ডাম্পিং করা হয়েছে। এরপর ওপরের দিকে মজবুত হয়ে ওঠার পর সিসি ব্লকের ওপরেও জিও ব্যাগ সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে ব্লকগুলো আর নিচে দেবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। টি-গ্রোয়েন থেকে ৫০ মিটার এলাকাজুড়ে ৪ হাজার ২০৬টি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।