রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

রাসিকের কোটি টাকার সড়কবাতি পুড়িয়েছেন কর্মকর্তারা!

আদালতে দুজনের স্বীকারোক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

এক বছরে কোটি টাকার সড়কবাতি পুড়ে ফেলার অভিযোগে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) এক প্রকৌশলী ও এক কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। দীর্ঘদিন ধরে বৈদ্যুতিক শাখার কয়েকজন ‘ষড়যন্ত্র’ করে সড়কবাতি পোড়ানোর কাজটি করে আসছিলেন বলে তথ্য পেয়েছে তদন্ত সংস্থাটি। এর মধ্যে উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল হাসান ও কর্মচারী শাহীন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রাসিক সূত্র জানায়, রাতের ঝলমলে আলোয় আলোকিত কিছু এলাকায় হঠাৎ করেই সড়কবাতি পুড়ে যেত। নানাভাবে তৎপরতা চালিয়েও এটি রুখতে পারছিল না সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এর পরই মামলার সিদ্ধান্ত নেন মেয়র। সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘যেসব বাতি পুড়ে যাচ্ছিল, দেখে মনে হয়েছে কেউ গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়েছে। বার বার সড়কবাতি পুড়ে যাওয়ার ঘটনা রহস্যজনক মনে হয়েছে। এ কারণে মামলার সিদ্ধান্ত নেই।’ রাসিক সূত্র জানায়, গত এক বছরে কোটি টাকার সড়ক বাতি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নষ্ট হয়েছে কিছুদিন আগেই বসানো হাই-মাস্ক লাইট। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মামলার পরই এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় বৈদ্যুতিক শাখার কর্মচারী শাহীন। তার তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল হাসানকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এরপরই বেরিয়ে আসতে শুরু করে, নেপথ্যে থেকে কারা এতদিন পুড়িয়েছেন সড়কের বাতি। ইতিমধ্যে তারা দুজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রাসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী খন্দকার খায়রুল বাশার জানান, দীর্ঘ সময় ধরে সড়কবাতি পুড়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে তারা লাইট বুয়েটে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলেন।

 ১৭ সেপ্টেম্বর সেখান থেকে পাঠানো যে ফলাফল তারা পেয়েছেন, তাতে অতিরিক্ত ভোল্টেজের কারণে এতদিন লাইটগুলো পুড়েছে। ফলে তারা এখন নিশ্চিত, ইচ্ছাকৃতভাবে ভোল্টেজ বাড়িয়ে সেটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন কর্মকর্তা সমর পাল জানান, সড়কবাতিগুলো পুড়ে যাওয়াটি রহস্যজনক হওয়ার কারণেই মেয়রের পরামর্শে তিনি মামলা করেছেন। মামলাটির তদন্ত করছে পিবিআই। তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর উপ-পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে আদালতে একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও একজন কর্মচারী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা আরও অনুসন্ধান করছেন। শিগগিরই এ ঘটনার নেপথ্যের সবার নাম উন্মোচন করে আদালতে অভিযোগপত্র দেবেন। তিনি আরও জানান, মামলাটির তদন্ত শুরুর পর বিভিন্ন এলাকায় সোর্স নিযুক্ত করা হয়েছে। এর পর থেকে সড়ক বাতি পোড়ানো বন্ধ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর