গরিবের সবজি হিসেবে পরিচিত গোল আলুর কেজিও এখন ৫০ টাকা ছুঁইছুঁই করছে। প্রান্তিক কিংবা খেটে খাওয়া মানুষ চাল, আলু আর লবণ হলেও তিন বেলা কাটিয়ে দিতে পারে অনায়াসে। কিন্তু বাজারদরের ঊর্ধ্বমুখিতার কারণে তা আর হচ্ছে না। একদিকে মোটা চালের দাম বাড়ছে অব্যাহতভাবে, অন্যদিকে গতকাল রাজধানীর বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায়। অবশ্য আলুকে একটি সর্বজনীন সবজি হিসেবেও ব্যাখ্যা করেন কৃষি ও খাদ্যবিদরা। যদিও পুষ্টিবিদরা একে সবজি হিসেবে ধরতে চান না। তারা মনে করেন এটি একটি শর্করাজাতীয় খাবার, যা ভাতের সঙ্গে তুলনীয়। আলুতে ভিটামিন এ, বি ও সি আছে। এ ছাড়া আলুর খোসায় আছে ভিটামিন এ, পটাসিয়াম, আয়রন, অ্যান্টি-অক্সাইড, ফাইবারসহ প্রচুর কার্বোহাইড্রেট। রিকশাচালক রবিউল গতকাল রামপুরা বউবাজারে আলু কেনার সময় আক্ষেপ করে বললেন, ‘আর বোধহয় বাঁচতে পারব না। হয় ঢাকা ছাড়তে হবে, না হয় পৃথিবী ছাড়তে হবে।’ আধা কেজি আলু কিনে দোকানদারকে ২৫ টাকা দিয়ে অনেক অনুরোধের পর বিক্রেতা তাকে ২ টাকা ফেরত দিলেন। এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘ভাই! মোটা চালের ভাত, ডাল আর আলু ভর্তা খাওয়াও এখন কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’ জানা গেছে, রাজধানীর বাজারে টানা প্রায় তিন মাস ধরে আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। গত এক সপ্তাহেই পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির হিসাবেই পণ্যটির দাম গত এক মাসে বেড়েছে কেজিতে ৯ শতাংশ। আর গত বছরের একই সময়ে প্রতি কেজির দাম ছিল ২৫ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, সারা দেশে বন্যার কারণে অন্যসব সবজির উৎপাদন কমে গেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক সবজির খেত। কিছু এলাকার গাছ মরে গেছে। ফলে উৎপাদন কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। তাই আলুর চাহিদা বেড়েছে। দামও বেড়েছে। এ ছাড়া সামনেই আলুর বীজ বোনার সময়। বর্তমানে বাজারে যা আছে সবই পুরনো আলু, যার বেশির ভাগই বীজ হিসেবে ব্যবহার হয়। মূল্য বৃদ্ধির পেছনে এও একটি কারণ বলে মনে করেন বিক্রেতারা। ভোজ্য তেলের দামও এক সপ্তাহের ব্যবধানে লিটারে বেড়েছে ৫ টাকা।