আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজধানীর ধোলাইরপাড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ চলবে। আমরা ভাস্কর্য নির্মাণ করবই। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর হামলার ধৃষ্টতা যারা দেখিয়েছে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে। গতকাল সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ধোলাইপাড়ে নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের কাজ চলবে। ভাস্কর্য হবেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা (আলেমসমাজ) যে প্রস্তাব দিয়েছে এটা তাদের বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী তাদের (আলেম) সাক্ষাৎ দেবেন কিনা তা আমি জানি না। আলোচনার সুযোগ আছে কিনা তাও প্রধানমন্ত্রী দেখছেন। সব বিষয়েই সরকারপ্রধান যদি মনে করেন তাহলে হতে পারে। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের ঘটনা অবশ্যই সংবিধান এবং রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। কারণ বঙ্গবন্ধু তো আমাদের জাতির পিতা। দেশে দেশে যেখানে সৌদি আরব, কাতার, মিসর, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তানেও ভাস্কর্য আছে। অন্য মুসলিম দেশগুলোয়ও আছে। সেসব দেশের মানুষ তো সেখানকার ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলে না। দেবতার মূর্তি আর মানুষের ভাস্কর্য এক নয়। দেবতাকে তো পূজা করা হয়, কিন্তু এখানে মানুষকে পূজা করা হচ্ছে না। কাজেই এটাকে তারা কেন এভাবে নিচ্ছে? কুষ্টিয়ায় তারা যা করেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও মধুদার ভাস্কর্যের ওপর হামলা চালিয়েছে। এটা যারাই করবে এবং যারা এ ধৃষ্টতা দেখাবে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে।এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে ধর্ম খুব স্পর্শকাতর। তাই হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে উসকানিমূলক কিছু করে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হোক, আমরা তা চাই না। রাজনৈতিকভাবে সংকটের সমাধান করতে চায় সরকার। তিনি বলেন, কেউ হামলার হুকুম দিয়েছে এমন কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা সরকারে আছি, আমাদের ঠান্ডা মাথায় এগোতে হবে। কথায় কথায় মাথা গরম করলে চলবে না। হুট করে মাথা গরম করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। বুঝে শুনে আমাদের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে অহেতুক দেশে অশান্তি-বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিজেই দেখছেন। আমরা ভেবেচিন্তে যুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাই।
বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় একটি অরাজনৈতিক সংগঠন মামলা করেছে। এ বিষয়টি আপনারা কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কোনো দলের নন। তাই অরাজনৈতিক কোনো সংগঠনের মামলা করাটা ইতিবাচক। উপযুক্ত প্রমাণ পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।