সিলেটের সবকটি কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি প্রদানের দাবিতে গতকাল থেকে সিলেট বিভাগে শুরু হয়েছে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট। ধর্মঘটের কারণে প্রাইভেট ও জরুরি সেবাদানকারী গাড়ি ছাড়া কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করেনি। যানচলাচল বন্ধ থাকায় জনদুর্ভোগ ছিল চরমে। সিলেট জেলার সবকটি পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে গতকাল থেকে ৭২ ঘণ্টার সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় ‘বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’। ধর্মঘটের প্রথম দিন গতকাল ভোর থেকে সিলেট নগরীসহ সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ও বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে অবস্থান নেন পরিবহন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের পিকেটিংয়ের কারণে সকাল থেকে সিলেটের রাস্তাগুলো যানশূন্য হয়ে পড়ে। শুধুমাত্র প্রাইভেট গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ও সংবাদপত্রের গাড়িসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহনগুলোকে রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে। ধর্মঘটের কারণে সিলেট থেকে কোনো দূরপাল্লা ও আঞ্চলিক সড়কে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। চলাচল করেনি কোনো পণ্যবাহী ট্রাক ও পিকআপ। সিএনজি অটোরিকশাও ধর্মঘটের কারণে ছিল না রাস্তায়। ফলে সকালে ঘর থেকে বের হয়েই যাত্রীরা পড়েন বিপাকে। গাড়ি না পেয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ধর্মঘটের কারণে সিএনজি অটোরিকশা বন্ধ থাকায় চাহিদা বেশি ছিল রিকশার। এ সুযোগে রিকশা চালকরাও বাড়িয়ে দেন ভাড়া। এ নিয়ে চালক ও যাত্রীদের মধ্যে অপ্রীতিকর নানা ঘটনাও ঘটে। সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল জানান, দীর্ঘদিন ধরে সিলেটের সব পাথর কোয়ারি বন্ধ রয়েছে। এতে পাথর উত্তোলন, ভাঙা ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত লাখো শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া পাথর পরিবহন বন্ধ থাকায় হাজার হাজার ট্রাক অচল হয়ে পড়েছে।
ট্রাক না চলায় মালিকরা গাড়ির কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। কিস্তি দিতে না পারায় অনেক মালিকের গাড়ি কোম্পানি জব্দ করে নিয়ে গেছে। পাথর শ্রমিক এবং ট্রাক মালিক ও শ্রমিকদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে দাবি জানিয়ে আসলেও পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তারা সব ধরনের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।