করোনা মহামারীতে নির্যাতনের মাত্রা প্রতি মাসেই বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ের সঙ্গে সহিংসতার রূপও পরিবর্তিত হচ্ছে, আর এর প্রধান শিকার হচ্ছে নারী-শিশু। চলমান এই পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিএনডব্লিউএলএ) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সংগঠনটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী নারী-শিশুর প্রতি নির্যাতন বন্ধে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। সালমা আলী বলেন, বিএনডব্লিউএলএর আইনজীবীরা এই মহামারীর মধ্যেও নির্যাতিত ও সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুদের আইনি সহায়তা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি নির্যাতিত নারী-শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। তা হলো- ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুদের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে তাদের সার্বিক আইনি সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রুতবিচার এবং সাক্ষী সুরক্ষার পাশাপাশি আধুনিক ফরেনসিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেসসমূহের যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। তদন্তকাজ রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে। আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সব স্তরে প্রশিক্ষিত কর্মী থাকতে হবে। উচ্চ আদালতে নারী নির্যাতন সংশ্লিষ্ট মামলা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দ্রুত বিচার সম্পন্নের জন্য পৃথক কোর্ট প্রয়োজন। মানব পাচার সংক্রান্ত মামলা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্নের জন্য ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুদের সামগ্রিক তথ্য সংরক্ষণের জন্য যথাযথ মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। প্রান্তিক গোষ্ঠীর (হিজড়া, প্রতিবন্ধী) জন্য বৈষম্যহীন আইনি পরিষেবা নিশ্চিত করা। বাস-ট্রেনসহ সব কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মতো কার্যকরী কমিটি গঠন করতে হবে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোবায়দা পারভিন।
অনুষ্ঠানে বিদেশফেরত অভিবাসী শ্রমিক, তৃতীয় লিঙ্গ, গৃহ শ্রমিক ও যৌনকর্মীদের প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে মহামারীর সময়ে তাদের প্রতি হওয়া নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
