দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মাছের আড়ত বরিশালের পোর্ট রোডের মোকামে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। ইলিশ মাছ নেই বললেই চলে। দেশীয় অন্যান্য প্রজাতীর মাছও কম। শীত মৌসুমে মাছের চাহিদা কম থাকায় ইলিশ ছাড়া অন্যান্য মাছের দামও কম। বিগত বছরের মতো মাঘ মাসে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে আশা আড়তদারদের। আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র-আশ্বিন এ চার মাস ইলিশের প্রধান মৌসুম। তবে সারা বছরই নদী এবং সাগর থেকে কম-বেশি ইলিশ আহরিত হয়। গত বছর এ সময়ে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ১ হাজার মণ ইলিশ আসত বরিশাল মোকামে। তবে এ বছর মোকামে দেখা দিয়েছে ইলিশের আকাল। গত বৃহস্পতিবার সর্বসাকল্যে ১০০ মণ ইলিশ আসে বরিশাল মোকামে। গতকাল শুক্রবার এসেছে ১০০ মণেরও কম। পোর্ট রোড পাইকারি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলী আশরাফ জানান, গতকাল মোকামে এক কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের প্রতি মণ ইলিশ পাইকারি ৩৬ হাজার, এক কেজি সাইজ প্রতি মণ ৩২ থেকে ৩৩ হাজার এবং রপ্তানিযোগ্য এলসি সাইজ (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৩০ হাজার টাকায়। জেলা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মো. নাসির উদ্দিন জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের পাশাপাশি সাগর মোহনায় জেগে ওঠা চরের কারণে সাগরের ইলিশ নদীতে আসতে পারছে না। তবে গত মৌসুমের মতো এবারও মাঘের মাঝামাঝি সময়ে অভ্যন্তরীণ নদী এবং সাগরে ইলিশ আহরণ বাড়বে আশা ইলিশ আড়তদার মো. জহির সিকদারের। তিনি বলেন, ২০-২৫ বছর পর গত বছর শীত মৌসুমে বড় বড় সাইজের প্রচুর ইলিশ আহরিত হয়েছিল অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে। এখন যে পরিমাণ ইলিশ আসছে সেগুলো বড় সাইজের। আগামী মাসে বিগত বছরের মতো ইলিশ সরবরাহ বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন ইলিশ ব্যবসায়ী জহির সিকদার। এদিকে শীত মৌসুমে খাল-বিল থেকে আহরিত মাছে বাজার সয়লাব থাকলেও বর্তমানে বরিশাল মোকামে দেশীয় প্রজাতীর অন্যান্য মাছের সরবরাহও অনেক কম। দামও তুলনামূলক অনেক কম। গতকাল বড় সাইজের রুই-কাতলা প্রতি কেজি ২ থেকে আড়াই শ টাকা, পোয়া মাছ সাইজ ভেদে দেড়শ থেকে ৩০০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। অন্যান্য মাছের দামও হাতের নাগালে। সামুদ্রিক অন্যান্য মাছের দামও কম। পোর্ট রোডের মাছ ব্যবসায়ী মো. হারুন জানান, ধানের মৌসুম হওয়ায় জেলেরা নদীতে মাছ শিকার বন্ধ রেখে ধান কর্তনে ব্যস্ত। এ কারণে নদী-খাল-বিলে মাছ আহরিত হচ্ছে কম। তবে আগামী দিনগুলোতে দেশীয় প্রজাতীর অন্যান্য মাছের সরবরাহ বাড়বে বলে ধারণা করছেন তারা।