সোমবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা নামল

সমাপনীতে প্রদর্শিত হয় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত ৯ দিনের ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২১’-এর পর্দা নামল। গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে উৎসবের সমাপনী আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং আয়োজকদের পক্ষে মূল আয়োজক রেইনবো ফিল্মস-এর চেয়ারম্যান আহমেদ মুজতবা জামাল ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ। হাছান মাহমুদ বলেন, সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বিশ্ববাজারে এদেশের চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতা করবে। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জাতির পিতার হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শুধু তার স্বর্ণালি যুগেই ফিরে যাবে না, অচিরেই তা বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করবে। আগামী বছর থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আর্থিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে তথ্য মন্ত্রণালয়। তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নির্দেশনায় করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় সেরা ও বিশ্বে ২০তম স্থান অর্জন করেছে। যে মাত্র ২২টি দেশ করোনার মধ্যে ধনাত্মক জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে তৃতীয়। কে এম খালিদ বলেন, সরকার চলচ্চিত্রশিল্পকে সব সময় প্রাধান্য দিয়ে আসছে। করোনা উপেক্ষা করে প্রণোদনা দিয়ে হল খোলার ব্যবস্থা করছে সরকার। এই উৎসবকে উপমহাদেশের একটি বৃহৎ উৎসব উল্লেখ করে ভবিষ্যতে এই উৎসবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অনুদান আরও বাড়ানো হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী।

শাহরিয়ার আলম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই উৎসবের বিষয়ে সর্বজ্ঞাত, এমন কি আজকের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি অবগত এবং সব সময় উৎসবের খোঁজখবর নেন। প্রধানমন্ত্রী সশরীরে আসতে না পারলেও উৎসব নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে তার।

অনুষ্ঠানে সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে কিরঘিজস্তানের ‘রোড টু এডেন’ এবং দর্শকপ্রিয়তম চলচ্চিত্র হিসেবে ‘গন্ডি’ নির্মাতাদেরসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার বিতরণ করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।

আয়োজকদের পক্ষে জুরি, অংশগ্রহণকারী, স্বেচ্ছাসেবী ও দর্শকসহ অর্থ, তথ্য, সংস্কৃতি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান আহমেদ মুজতবা জামাল ও ম. হামিদ।

আগামী বছরের উৎসব ২০২২ সালের ১৫-২৩ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে বলেন সমাপনী অনুষ্ঠান থেকে ঘোষণা দেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ।

এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন ফিল্মস্, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম মেকার বিভাগ, লিজেন্ডারি লিডারস হু চেঞ্জ দি ওয়ার্ল্ড এবং ট্রিবিউট বিভাগে এবারের উৎসবে মোট ৭৩টি দেশের ২২৭টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।

জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তন, শিল্পকলার নন্দনমঞ্চ, বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স এবং সীমান্ত স্কয়ার সিনেপ্লেক্সসহ আটটি মিলনায়তনে একযোগে প্রদর্শিত হয় উৎসবের চলচ্চিত্রগুলো। এ ছাড়া ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমেও প্রদর্শিত হয় ছবিগুলো।

স্বাগতিক বাংলাদেশসহ উৎসবে অংশ নেয় আফগানিস্তান, আলবেনিয়া, আর্মেনিয়া, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, বেলজিয়াম, ভুটান, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, কিউবা, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, প্যালেস্টাইন, জার্মানি, গ্রিস, হংকং, হাঙ্গেরি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কাজাকস্তান, কসোভো, কিরগিজস্তান, লাটভিয়া, লেবানন, লুক্সেমবার্গ, মালয়েশিয়া, মেক্সিয়া, নেপাল, নরওয়ে, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, কাতার, রাশিয়া, স্টোভেনিয়া, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, সিরিয়া, তাইওয়ান, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভেনেজুয়েলা এবং সাইপ্রাস।

সমাপনী আয়োজনে প্রদর্শিত হয় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত একলাস আবেদীন পরিচালিত ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি’।

মুজিব শতবর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি এবারের উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে। গত ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ স্লোগানে গত ১৬ জানুয়ারি জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর