বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

বেসামাল চালের বাজার

পাইকারি এবং খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে রাজশাহীতে, হিমশিম খাচ্ছেন নিম্নবিত্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বেসামাল চালের বাজার

রাজশাহীতে বেড়েই চলেছে চালের দাম। এক মাস ধরেই চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। পাইকারি এবং খুচরা দুই বাজারে বেড়েছে চালের দাম। এতে নিম্নবিত্ত মানুষরা হিমমিশ খাচ্ছেন চাল কিনতে। বেসামাল চালের বাজার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা। তবে চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ওপেন এলসির সুযোগ না থাকার কারণে বাড়ছে দাম। এটিই চালের বাজার অস্থিতিশীল থাকার মূল কারণ। ওপেন এলসির সুযোগ না হলে চালের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। তবে আগামী বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে নতুন ধান উঠলে নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে চালের দাম। রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারে পাইকারি এবং খুচরা চালের আড়তগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, চালের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। পাইকারি বাজারে কোনো কোনো চালের দাম বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তেমনি খুচরা বাজারে কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে দাম। আঠাশ চালের দাম কেজি প্রতি ২ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৪ টাকা। তবে পাইকারি বাজারে ৫০ কেজি বস্তার দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা। এটির মূল্য আগে ছিল ২ হাজার ৫০০ টাকা। মিনিকেটের দাম ২ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৮ টাকা। পাইকারি বাজারে এর দাম ৩ হাজার টাকা। এর আগে দাম ছিল ২ হাজার ৮০০ টাকা। পাইকারি বাজারে জিরাশাইলের দাম ৩০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৮০০ টাকা। আর খুচরা বাজারে ২ টাকা বেড়ে দাম হয়েছে ৫৮ টাকা। বাসমতি চালের দাম বস্তা প্রতি ৬০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ টাকা। এতে খুচরা বাজারেও দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৩ টাকা করে। বাসমতি এখন ৬৫ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বাড়তি দাম নাজিরশাইল আর স্বর্ণারও। নাজিরশাইলের দাম ২ হাজার ৬০০ টাকা থাকলেও এখন ৪০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার টাকা। স্বর্ণা দাম ২০০ টাকা করে বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ২০০ টাকা। খুচরা বাজারে নাজিরশাইলের দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা বেড়ে দাম হয়েছে ৬৫ টাকা। নগরীর সাহেববাজারে চাল কিনতে এসেছিলেন সাথী রানী। তিনি বলেন, ‘আমি একটি মেসে রান্নার কাজ করি। আমরা দিন আনি দিন খাই। চালের দাম এখন বাড়তি। ২ টাকা দাম বাড়লেও এটাও আমার কাছে বেশি। দাম কমলেই আমার মতো সব গরিব মানুষদের জন্য সুবিধা হয়।’ বাড়তি এই চালের দাম নিয়ে কথা বলেছেন চাল ব্যবসায়ী মেসার্স মক্কা রাইস এজেন্সির মালিক আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমি জানি সারা দেশে মাত্র ৩২০ জন আমদানিকারককে এলসি খোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই বড় বড় ব্যবসায়ী। সাধারণ ব্যবসায়ীদের এই সুযোগ দেওয়া হয়নি। এখন যারা ভারত থেকে চাল আনছেন তারা নিজেরাই মজুদ করছে। তাদের এই সিন্ডিকেটের জন্য ভারত থেকে চাল আমদানি করেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ওপেন এলসির সুযোগ সরকার না দিলে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে এত সহজে আসবে না। এখন প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে চালের দাম বাড়তে পারে। তবে নতুন চাল কয়েক মাস পরে বাজারে এলে দাম কমতে পারে। রাজশাহী পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন, ‘আমরা এলসি খোলার সুযোগ পাইনি। হাতে গোনা কিছু লোক এলসি খোলার সুযোগ পেয়েছেন।

 যারা পেয়েছেন তারা চাল কিনে কখন কী করছেন কিছুই বুঝতে পারছি না। ওপেন এলসির সুযোগ নেই বলেই চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর