কঠোর লকডাউনের তৃতীয় দিনে গতকাল খুলনায় ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথ দিয়ে অসংখ্য মানুষ পায়ে হেঁটে শহরে ঢুকছে। গল্লামারী ও জিরোপয়েন্ট এলাকায় দেখা যায়, শহরের প্রবেশ মুখে পুলিশের চেকপোস্টের কিছু দূরে ইজিবাইক থেকে যাত্রী নামানো হচ্ছে। তারপর তারা পায়ে হেঁটে শহরে ঢুকে অন্য ইজিবাইকে গন্তব্যে যাচ্ছে। ঈদের আগে যারা শহর ছেড়েছিলেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তারাও ফিরতে শুরু করেছেন। সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন, মোটরসাইকেল রিকশাভ্যান তুলনামূলক বেড়েছে। উপজেলা সদরের হাটবাজার থেকে শুরু করে নগরীর প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলা, সাতরাস্তার মোড় এলাকায়ও দোকানপাট খোলা রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। দোকানে সাটার বন্ধ রেখে সামনে কর্মচারীরা দাঁড়িয়ে থাকছেন। ক্রেতা এলে সাটার খুলে ভিতরে তাকে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ দেখলে দোকানপাট বন্ধ হচ্ছে, আবার একটু পর দোকান খুলে দেওয়া হচ্ছে। এদিকে সাধারণ মানুষের চলাচলে করোনা সংক্রমণ আবারও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। জেলা সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ জানান, টানা লকডাউন ও বিধিনিষেধের কারণে খুলনায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমে এসেছে। এটা খুবই স্বস্তির খবর কিন্তু চলমান লকডাউনে পথেঘাটে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সংক্রমণ ফের ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি মাস্ক ব্যবহার, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, লকডাউনে ঘরে থাকা ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানান। গতকাল সরেজমিন নগরীর শিববাড়ি, মজিদ সরণি, সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, বাইপাস রোড, ময়লাপোতা মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে। চেকপোস্ট বসিয়ে জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে মানুষের অহেতুক চলাচল বেড়েছে। মূল সড়ক ছাড়াও পাড়া-মহল্লায় অলিগলিতে ইজিবাইক, রিকশাভ্যান ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে। জানা যায়, খুলনাসহ সারা দেশে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ও মৃত্যু রোধে গত শুক্রবার থেকে সরকার ঘোষিত কঠোরতম বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে। খুলনায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছে ২২ হাজার ৩৮৭ জন, মৃত্যু হয়েছে ৫৬৮ জনের। সর্বশেষ গতকাল ৮৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৯৭ জন করোনা শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ২৩ শতাংশ। এদিকে খুলনায় বিধিনিষেধ অমান্য করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে গত দুই দিনে ৮৪টি মামলায় ৮৪ জনকে ৫৫ হাজার ১৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সহায়তা প্রদান করেন।