করোনার প্রভাবে দেড় বছরে পুঁজি হারিয়ে বিপাকে পড়েছে খুলনার প্রায় ৫০ হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। টানা লকডাউন ও বিধিনিষেধে একদিকে দোকানে বেচাকেনা বন্ধ। অপরদিকে ঘরভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, ভ্যাট ট্যাক্স দিতে হচ্ছে নিয়মিত। বাসা ভাড়া, ভরণ-পোষণে পুঁজি শেষ হয়ে গেছে অনেকের। ফলে বাধ্য হয়ে বিকল্প আয়ের খোঁজে পেশা বদলাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, নগরীর গোবরচাকা নবীনগরের জামিলুর রহমান নিউমার্কেটে অভিজাত শাড়ির দোকানে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতেন। করোনায় এক বছরের বেশি তার চাকরি নেই। বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ফল ও ভাজাভুজি বিক্রি করেন। একইভাবে শেখপাড়া এলাকায় সোহরাব মিয়ার জমজমাট লোহার ব্যবসা ছিল। লকডাউনের ছয় মাসের মধ্যে দেনার দায়ে দোকান ছাড়তে হয়েছে। বর্তমানে ময়লাপোতা-গল্লামারী-নতুন রাস্তা রুটে ইজিবাইক চালিয়ে সংসার ব্যয় মেটান। খুলনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মফিদুল ইসলাম টুটুল জানান, লকডাউন চলাকালীন সময়ও ব্যাংক ঋণের সুদ বন্ধ হয়নি। কর্মচারীদের বেতন, ট্রেড লাইসেন্স ভ্যাট ট্যাক্সের টাকা দিতে হয়েছে। কিন্তু আয়ের সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
উৎসবের দিনগুলোতেও দোকানপাট বন্ধ থাকায় অধিকাংশ মালামাল মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধের পথে। পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে ঋণগ্রস্ত হয়ে অনেকের দেউলিয়া হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্নআয়ের মানুষকে সহায়তার জন্য সরকার তিন হাজার দুইশত কোটি টাকার প্রনোদনা ঘোষনা করেছে। ওই টাকা দিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋন মওকুফ, ট্রেড লাইসেন্স ও ভ্যাট ট্যাক্সে বিশেষ ছাড় দিতে হবে।নগরীর ডাকবাংলা সুপার মার্কেট ও ক্লে রোড ব্যবসায়ী সমিতি সাধারণ সম্পাদক এইচএম মাহফুজুল ইসলাম বাবলু জানান, এখানকার প্রায় দুই হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর্থিক ক্ষতিতে রয়েছে। প্রতি মাসে এসব দোকানে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। বেচাকেনা না থাকায় পুঁজি শেষ হয়ে গেছে। ফলে দেনার ভারে বন্ধ হচ্ছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।