শনিবার, ৭ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ, ঘটছে প্রাণহানি

বোমা মেশিনের তান্ডব থামছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

পানি উত্তোলন যন্ত্রকে (পাওয়ার পাম্প) বিশেষ কায়দায় রূপান্তর ঘটিয়ে নাম দেওয়া হয়েছে ‘বোমা মেশিন’। রূপান্তরিত এই মেশিন ব্যবহার অবৈধ। কিন্তু সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে এই অবৈধ মেশিনের ব্যবহার থামছে না কিছুতেই। বিভিন্ন সময়ে টাস্কফোর্সের অভিযানে অসংখ্য বোমা মেশিন জব্দ করে ধ্বংস করা হলেও ‘পাথরখেকোরা’ ফের এ অবৈধ যন্ত্রের ব্যবহার শুরু করে। এতে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ। ভূমি ধসে ঘটছে শ্রমিকের প্রাণহানি। জানা গেছে, ‘বোমা মেশিন’ চালালে ভূগর্ভস্থ মাটির স্তর পরিবর্তন হয়ে যায়। ফলে দেখা দেয় ভূমিধসের শঙ্কা। ২০০৯ সালে উচ্চ আদালত এই যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। উচ্চ আদালতের এমন নির্দেশনার পর থেকে সিলেটের পাথর কোয়ারিতে পরিবেশ ও প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। কিন্তু তার পরও এই যন্ত্রের ব্যবহার থামানো যাচ্ছে না। এত দিন পাথর উত্তোলনে এই যন্ত্র ব্যবহার করা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে বালু উত্তোলনেও এটিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। গত বুধবার সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদের ঢালারপার ও ইসলামগঞ্জ বাজার এলাকায় অভিযান চালায় টাস্কফোর্স। কোম্পানীগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুসা নাসের চৌধুরীর নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের এই অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন। অভিযানে বোমা মেশিন সংযুক্ত নয়টি নৌযান শনাক্ত করা হয়। ধলাই নদ থেকে এই অবৈধ যন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলনের দায়ে নৌযানের মালিক ৯ জনকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।  কোম্পানীগঞ্জ ছাড়াও এই নিষিদ্ধ ‘বোমা মেশিন’ ব্যবহৃত হচ্ছে জাফলংয়েও। রাতের বেলা ‘বোমা মেশিন’ দিয়ে বালু উত্তোলন করে বড় বড় নৌকা ও ভলগেট ভরা হয়। ভোরে বালুবোঝাই নৌকাগুলো তাদের গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর আগে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে একই কায়দায় ‘বোমা মেশিন’ দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হতো। প্রশাসনের কড়াকড়িতে বর্তমানে নিষিদ্ধ এই প্রক্রিয়ায় পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য বলেন, বালু বা পাথর তোলার কাজে ‘বোমা মেশিনের’ ব্যবহার উচ্চ আদালত থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অবৈধ এই যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত টাস্কফোর্সের অভিযান চলছে।

সর্বশেষ খবর