সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন ৪ সেপ্টেম্বর। প্রচারণার জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিলেও বসে নেই প্রার্থীরা। নানা কৌশলে তারা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের পক্ষে প্রচারণায় দলের এক ডজনের বেশি কেন্দ্রীয় নেতা অংশ নিয়েছেন। স্থানীয় নেতাদের নিয়ে মাঠে আছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। আর দল থেকে বহিষ্কার হওয়ায় দলীয় নেতারা দূরত্ব বজায় রেখে চলায় তৃণমূল কর্মীদের ওপর আস্থা রেখে প্রচারণা চালাচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমেদ চৌধুরী। এরই মধ্যে হাবিবের পক্ষে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ও কার্যনির্বাহী সদস্য আজিজুস সামাদ ডন প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও সিলেট মহানগরে শোক দিবসের বিভিন্ন সভায় অংশ নিয়ে তারা উপনির্বাচনে হাবিবকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। এ ছাড়া দলের নেতা-কর্মীদের ডেকে হাবিবের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে যান তারা।
আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ছাড়াও যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ সংগঠনের প্রায় একডজন নেতা সিলেট এসে হাবিবের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যান।
হাবিবের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে আজ সিলেট আসছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু। কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি ও কড়া নির্দেশনার পর সিলেট-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলার নেতা-কর্মীরা আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন।এ প্রসঙ্গে হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, সিলেট-৩ আসনভুক্ত এলাকার স্থানীয় নেতৃবৃন্দ নৌকা প্রতীকের পক্ষে একাট্টা। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। উন্নয়নের স্বার্থে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ঐক্যের ফসল হিসেবে নৌকা প্রতীকের বিজয় হবে।
জাতীয় পার্টির পক্ষে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ কাজ করলেও এখন পর্যন্ত ঢাকা থেকে কোনো কেন্দ্রীয় নেতাকে সিলেট আসতে দেখা যায়নি। তবে একসময় জাতীয় পার্টির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত লাঙল প্রতীকের নিষ্ক্রিয় সমর্থকরা এবার অনেকটা সরব। মানুষের এ আগ্রহ কাজে লাগাতে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আতিক। তার ভাষ্যমতে এবার লাঙলের পক্ষে গণজোয়ার দেখছেন তিনি। এ গণজোয়ার দেখে ঢাকায় বসে থাকতে পারছেন না আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু কোনো কিছুই লাঙলের বিজয় ঠেকাতে পারবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আতিকুর রহমান আতিক।
অন্যদিকে দলের সিদ্ধান্ত না মেনে প্রার্থী হওয়ায় বহিষ্কৃত হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমেদ চৌধুরী। বহিষ্কার হওয়ায় তার পক্ষে মাঠে নেই দলের নেতারা। তবে পদবিহীন তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপি কর্মী ও সমর্থকরা তার পক্ষে কাজ করছেন। সংসদ সদস্য থাকাকালে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখা, ব্যক্তি ইমেজ ও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের চেষ্টাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চাইছেন শফি।
এ প্রসঙ্গে শফি আহমেদ চৌধুরী বলেন, মানুষ উন্নয়ন চায়। এজন্য তারা একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ মানুষকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নিতে চাইছে। দলের পদবিধারীরা প্রকাশ্যে তার পক্ষে না থাকলেও অনেকেই তার পক্ষে কাজ করছেন। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলেরই বিজয় হবে বলে আশাবাদী তিনি।