রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন চালু আগামী বছরই

বাংলাদেশ প্রতিদিনকে রেলমন্ত্রী

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন চালু আগামী বছরই

রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন চালু হলে পর্যটকসহ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে। আগামী বছর ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন চালু করা হবে। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত এটির নির্ধারিত মেয়াদ ধরা আছে। করোনাকালীন কাজ করতে সমস্যা এবং নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি কিছু স্থাপনার জমি পেতে সমস্যার কারণে কাজ বিলম্বিত হয়। সবমিলে ছয় মাস পিছিয়ে আগামী বছরের (২০২২) ডিসেম্বরে উদ্বোধনের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন।

কক্সবাজারে সুন্দর ও আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম-ঢাকার সঙ্গে কক্সবাজারের রেললাইন চালু হলে বিদেশিসহ পর্যটকদের ব্যাপকহারে আগমন ঘটবে। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে। আইকনিক স্টেশনের বিভিন্ন সুবিধায় রয়েছে যাত্রীরা এসে থাকতে পারবে। মালামাল রাখার জন্য ব্যবস্থা রাখা আছে। তিনি বলেন, এটি ট্রান্স এশিয়ান রেললাইনের একটি অংশ। ভবিষ্যতে মিয়ানমার অংশ হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা হবে। চকরিয়া থেকে মাতারবাড়ী পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মিত হবে। কক্সবাজারে বহুমুখী উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে এবং এখানকার অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হচ্ছে। তাছাড়া প্রকল্পকেন্দ্রিক কিছুটা সমস্যা থাকলেও নিজ নিজ এলাকায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সবকিছু এখন নিষ্পত্তি হচ্ছে।

রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত একটি আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন। সব সেক্টরেই উন্নয়ন হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সারা দেশে অনেক মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ ১০টি মেগা প্রকল্পের মধ্যে একটি। এর আগে শুক্রবার সকালে কক্সবাজার থেকে চকরিয়ায় আসার পথে কক্সবাজার রেলপথ পরিদর্শন করেছেন রেলপথমন্ত্রী এবং আগের দিন দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্রাক নির্মাণ প্রকল্প ও কক্সবাজারে অবস্থিত আইকনিক রেলস্টেশন ভবনের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছেন।

জানা গেছে, এই প্রকল্পের সার্বিক নির্মাণ অগ্রগতি ৬২ ভাগ। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজারকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনাসহ পর্যটকরা সাশ্রয়ী আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া সহজে ও কম খরচে মাছ, লবণ, রাবারের কাঁচামাল এবং বনজ ও কৃষিজ দ্রব্যাদি পরিবহন করা সম্ভব হবে।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের সেই সিআরবির হাসপাতাল নির্মাণের পক্ষে-বিপক্ষের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করে আসছেন। চট্টগ্রামের মানুষ যদি কোনো স্থাপনা না চান, তাহলে সেটা জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিছুদিন আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। সেটা খতিয়ে দেখা হবে। অথচ আন্দোলন তার আগেই শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু কী নিয়ে আন্দোলন এ বিষয়ে এর আগে রেলওয়ে, রেলমন্ত্রী কিংবা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনো দরখাস্ত দেওয়া হয়নি। দরখাস্ত বা অভিযোগ দেওয়ার পর যদি জোরপূর্বক কোনো কিছু করা হয়, তখন আন্দোলনের প্রশ্ন আসবে। তিনি বলেন, এ প্রকল্পের চুক্তি এবং যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া অনেক আগ থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু তখন কেউ এ নিয়ে আপত্তি তোলেনি। যখনই বাস্তবায়নের সময় এলো, তখনই আপত্তি শুরু হয়েছে। তা ছাড়া এখানে অন্যকিছু হচ্ছে না, বরং হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ হচ্ছে। কিন্তু একশ্রেণির মানুষ আছে, যাদের কাছে কোনো কিছুই ভালো লাগে না। কাজেই এ আন্দোলন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নাকি সত্যিই চট্টগ্রামের মানুষের স্বার্থে করা হচ্ছে। সেটি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

রেলমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পগুলোর বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত হলো সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) উৎসাহিত করা। সরকারের যত প্রকল্প আছে নীতিগতভাবে এর ৩০ শতাংশ যাতে পিপিপির অধীনে বাস্তবায়ন করা যায়। স্থানীয় এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ উৎসাহিত করার জন্য সরকার সেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তারই আওতায় রেলওয়ের এ প্রকল্পটি রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর