সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চলছে ‘ই-গেট’ স্থাপনের কাজ। আগমন ও নির্গমনের জন্য বসছে ছয়টি গেট। ই-গেট স্থাপিত হলে কমবে ইমিগ্রেশন-সংক্রান্ত বিড়ম্বনা। ই-পাসপোর্টধারীরা কোনো ধরনের বিড়ম্বনা ছাড়াই ইমিগ্রেশন শেষ করে ত্যাগ করতে পারবেন বিমানবন্দর। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দেশে ই-পাসপোর্টধারীর সংখ্যা এখনো কম হলেও একসময় এর ব্যবহার বাড়বে। ই-গেটের সুবিধা আপাতত সবচেয়ে বেশি ভোগ করবেন প্রবাসীরা। ই-গেট স্থাপনের ফলে সিলেটের প্রবাসীদের পরিবার নিয়ে দেশে আসতে ও ফিরে যেতে কোনো ধরনের ইমিগ্রেশন ভোগান্তির শিকার হতে হবে না।
বাংলাদেশে ই-গেট কার্যক্রম শুরু হয় চলতি বছরের ৩০ জুন। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসানো ই-গেটের উদ্বোধন হয় সেদিন। এরপর শুরু হয় প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘ই-গেট’ স্থাপনের কাজ। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যাদের কাছে ই-পাসপোর্ট আছে তারাই ই-গেট দিয়ে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন। ই-পাসপোর্টে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ রয়েছে। পাসপোর্টধারীর যাবতীয় তথ্য ই-পাসপোর্টের চিপে সংরক্ষিত থাকে। ই-গেটে পাসপোর্ট স্ক্যানের পর গেটের সঙ্গে সংযুক্ত ক্যামেরা যাত্রীকে শনাক্ত করবে; যা এত দিন ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে করত ইমিগ্রেশন পুলিশ। যাত্রীকে শনাক্তের পরই খুলে যাবে ই-গেট। এতে কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হবে। জানা গেছে, বিমানবন্দরে বিদেশযাত্রী ও দেশে আসা প্রবাসীদের নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয়। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন করতে গিয়ে তারা নানা ভোগান্তিতে পড়েন। এ ভোগান্তি দূর ও বিমানবন্দরের যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ই-গেট স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার। এর অংশ হিসেবে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পর সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসানো হচ্ছে ই-গেট। বিমানবন্দরটিতে ছয়টি ই-গেট বসানোর কাজ করছে ফ্লোরা লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে গেট স্থাপনের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। মাস দেড়েকের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফ্লোরা লিমিটেড বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও ইমিগ্রেশন বিভাগকে ই-গেটগুলো বুঝিয়ে দেবে বলে জানা গেছে। সূত্র জানান, ওসমানী বিমানবন্দরে ই-গেট কার্যক্রম শুরু হলে ই-পাসপোর্টধারীদের ইমিগ্রেশনের সময় কোনো কর্মকর্তার অহেতুক প্রশ্নের বা জেরার মুখোমুখি হতে হবে না। সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ওসমানীতে ই-গেট স্থাপনের কাজ চলছে। বিমানবন্দরে বহির্গমনের (ডিপার্টচার) জন্য তিনটি ও আগমনের (অ্যারাইভাল) জন্য তিনটি করে ই-গেট বসানো হচ্ছে। কাজ শেষ হওয়ার পর প্রজেক্ট বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ই-গেটগুলো বুঝিয়ে দেবে।
এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন হবে। হাফিজ আহমদ জানান, ই-গেট কার্যক্রম শুরু হলে ইমিগ্রেশনে ম্যানুয়াল কার্যক্রম কমবে। ই-পাসপোর্টধারী যাত্রীরা সহজেই ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন। এতে তাদের সময় কম লাগবে। বাংলাদেশে এখনো ই-পাসপোর্টধারীর সংখ্যা কম হওয়ায় শুরুতে দেশের যাত্রীরা এ সুবিধা কম পাবেন। তবে সময়ের সঙ্গে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বাড়বে।