সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতা ও দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খুলনার অধিকাংশ সড়কের এখন বেহাল দশা। শিপইয়ার্ড সড়ক, মুজগুন্নি মহাসড়ক, আবু নাসের হাসপাতাল লিংক রোড, সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড বাইপাসসহ নগরীর বিভিন্ন সড়কে পিচ, খোয়া উঠে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বিধ্বস্ত এসব সড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। নাগরিক নেতারা বলছেন, একই সঙ্গে মেগা প্রকল্পের অর্থে অপরিকল্পিত উন্নয়নেও ভোগান্তি বাড়ছে। শত কোটি টাকায় ড্রেন নির্মাণ করেও পানি নিষ্কাশনের অভাবে সড়কের ওপরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানি জমে থাকছে। এতে অধিকাংশ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদিকে ভোগান্তি চরমে পৌঁছায় সড়ক নির্মাণ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে নগরবাসী। সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে নতুন রাস্তা পর্যন্ত মুজগুন্নি মহাসড়ক সংস্কার দাবিতে মুজগুন্নি পার্কের সামনে আজ মানববন্ধন কর্মসূচি দিয়েছে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র নেতৃবৃন্দ। শিপইয়ার্ড সড়কের সংস্কার দাবিতে দুই দফায় মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। নির্মাণকাজ শুরু না করলে তারা ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। জানা যায়, মুজগুন্নি মহাসড়ক ও সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড বাইপাসে সংস্কার নিয়ে কেসিসি ও কেডিএ’র মধ্যে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন রয়েছে।
কেসিসি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কেডিএ সড়ক দুটি নির্মাণ করায় ব্যবহারের কিছুদিনের মধ্যে পিচ খোয়া ওঠে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এই নিম্নমানের সড়কের দায়ভার কেসিসি নেবে না। অন্যদিকে নির্মাণকাজ শুরুর আগেই শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। ২০১৩ সালে সরকারি অর্থায়নে ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন প্রকল্প নেয় কেডিএ। সাত বছর পর একই প্রকল্পে বাস্তবায়ন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৫৯ কোটি টাকা। সর্বশেষ দরপত্র জটিলতায় আবারও পিছিয়েছে সড়ক নির্মাণকাজ।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, প্রায় ১৪৩০ কোটি টাকায় নগরীতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন কাজ চললেও সুফল মেলেনি। উপরন্তু অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন স্থানে সড়ক উঁচু করায় বৃষ্টি হলেই ড্রেনের নোংরা পানি বাসাবাড়ি-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকছে। প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শিববাড়ি-ময়লাপোতা-সাতরাস্তা কেডিএ এভিনিউ উঁচু করলেও নতুন সড়কে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। খানাখন্দের সড়কে চলাচলে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে নগরজীবন। তবে কেসিসি কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন সড়ক সংস্কারে দরপত্র দেওয়া হয়েছে, বর্ষা শেষ হলেই মেরামত কাজ শুরু হবে।