শনিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বন্ধ ছয় চিনিকলে ভুতুড়ে অবস্থা

৯৮ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি, যন্ত্রপাতি পাহারায় হাতে গোনা কয়েকজন গার্ড

নজরুল মৃধা, রংপুর

দেখতে দেখতে এক বছর হয়ে গেল। রংপুরের শ্যামপুরসহ বন্ধ হওয়া ছয়টি চিনিকলে এবারও আখ মাড়াই হচ্ছে না। এসব মিলে চাকরিরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্য চিনিকলে বদলি করে দেওয়ায় রংপুরে শ্যামপুরসহ অন্য চিনিকলগুলো প্রায় জনমানবশূন্য ভুতুড়ে অবস্থায় রয়েছে। চিনিকল যন্ত্রপাতি- যানবাহন পাহারা দেওয়ার জন্য রয়েছে হাতে গোনা কয়েকজন গার্ড এবং দু-একজন কর্মকর্তা। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, রংপুরের শ্যামপুর সুগার মিল, পাবনা সুগার মিল, পঞ্চগড় সুগার মিল, সেতাবগঞ্জ সুগার মিল, রংপুর সুগার মিল ও কুষ্টিয়া সুগার মিলে গত বছর চিনি উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। সে সময় সংস্কার ও আধুনিকায়নের উদ্দেশ্যেই কারখানাগুলো আপাতত বন্ধ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানালেও এক বছরে চিনিকলগুলো চালুর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বন্ধ চিনিকলগুলো সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাবনা পাঠালেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রংপুরের শ্যামপুর চিনিকল বন্ধ হওয়ার সময় ৪৪৭ জন শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করতেন। বর্তমানে একজন এমডিসহ মোট ৪০ জনের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন গার্ড রয়েছে শুধু পাহারা দেওয়ার জন্য। এ ছাড়া কুকারসহ প্রায় ২০ জনের মতো কর্মচারী রয়েছেন। দিনের বেলাতেই চিনিকলে ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। সূত্রমতে, যে ছয়টি চিনিকল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেগুলোতে গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ শ্রমিক, কর্মচারী-কর্মকর্তা কাজ করতেন। এসব চিনিকলে এখন হাতে গোনা কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন শুধু পাহারা দেওয়ার জন্য। এসব চিনিকলে কর্মরতদের চালু থাকা রাজশাহী, জয়পুরহাট, মোবারকগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওসহ দেশের অন্য ৮টি চিনিকলে বদলি করা হয়েছে। ফলে বন্ধ চিনিকলে যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম অব্যবহৃত থাকার কারণে নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। চিনিকল সূত্র জানিয়েছে, চলতি মাসের ২৬ তারিখ থেকে অন্যান্য চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। শ্যামপুর আখ চাষি ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া মিলগুলোর এলাকার আখ অন্য মিলে নিয়ে মাড়াই করা হবে বলে বলা হয়েছে। বন্ধ মিল এলাকার আখ অন্য মিলে নিয়ে যাওয়া একটি সমস্যা। গত বছর চিনিকল বন্ধ হওয়ার পর আশা করেছিলাম এবার মিল চালু হবে। কিন্তু এ বছর চালুর কোনো উদ্যোগ নেই। এ অবস্থা আর কিছুদিন চললে যন্ত্রপাতি-যানবাহন জং ধরে নষ্ট হয়ে যাবে। এতে সরকারের ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

শ্যামপুর সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আহসান হাবিব জানান, চিনিকলের বিষয়ে আমরা কিছু প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। মিলে কর্মরতদের চালু থাকা অন্যান্য মিলে বদলি করা হয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর