রবিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

খুলনায় বাড়ছে সংক্রমণ বাড়ছে উদ্বেগ

ওমিক্রন শনাক্তের ব্যবস্থা নেই হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনা বিভাগে বিভিন্ন জেলায় হঠাৎ করেই করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। গত সপ্তাহের শুরুতে সংক্রমণ হার শূন্যের কাছাকাছি থাকলেও এ সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষার ভিত্তিতে শনাক্ত বেড়েছে। গতকাল খুলনা মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে ১৮৭টি নমুনা পরীক্ষায় পাঁচজনের করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে খুলনা জেলায় তিনজন, বাগেরহাটের একজন ও ঢাকা থেকে আগত আরেকজন করোনা শনাক্ত হয়। বর্তমানে খুলনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আটজন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে আইসিইউতে দুজন ও ইয়োলো জোনে ছয়জন ভর্তি রয়েছেন। এ ছাড়া কুষ্টিয়ায় ১০৫টি নমুনা পরীক্ষায় আটজন করোনা শনাক্ত হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য)-এর দফতর থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে করোনা শনাক্ত হলেও তারা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত কিনা জানা যায়নি। খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, খুলনায় ওমিক্রন শনাক্তের ব্যবস্থা নেই। এটা জানতে সন্দেহজনক ব্যক্তির নমুনা ঢাকায় আইইডিসিআর এ পাঠানো হচ্ছে।  জানা যায়, স্থলবন্দর ও সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় সর্বশেষ করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে দুর্দশায় পড়ে বিভাগে ১০ জেলার মানুষ। রোগীর চাপ সামলাতে নগরীর তিনটি সরকারি ও তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা চালু করা হয়।

ওইসময় অক্সিজেন সংকট করোনা চিকিৎসায় চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। খুমেক হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. রবিউল হাসান জানান, অক্সিজেন সংক্রট মোকাবিলায় এবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন জেনারেটর মেশিন স্থাপন করা হচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় এই মেশিনে প্রতি মিনিটে ১ হাজার লিটার অক্সিজেন তৈরি করা যাবে। আপৎকালীন সময়ে অক্সিজেন তৈরি করে পাইপের মাধ্যমে তা সরবরাহ করা যাবে। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের উপপরিচালক ডা. মো. মঞ্জুরুল মুরশিদ জানান, এখনো ওমিক্রনের ঢেউ না আসলেও আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে স্থলবন্দরগুলোতে সতর্কতা জারি রয়েছে। সন্দেহ হলে সেখানেই করোনার পরীক্ষা হচ্ছে। আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এখনো ৯৫ ভাগ মানুষ মাস্ক পরে না। তাদের সচেতন করতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

অন্যদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় খুলনা মহানগরে ১১ জানুয়ারি থেকে রাত ৮টার পরে মার্কেট-দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা ও মহানগর করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ভারতে করোনার নতুন ধরনের বিস্তারে আমরাও ঝুঁকির মধ্যে আছি। ভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার আগেই আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে সচেতন থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। ফলে ১১ জানুয়ারি থেকে রাত ৮টার পরে নগরীতে মার্কেট-দোকান খোলা রাখা যাবে না। সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ জানান, করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ১ লাখ ৬১ হাজার ৭২০টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ২৮ হাজার ১৯ জন রোগীর করোনা শনাক্ত হয়। গত নভেম্বর মাসে জেলায় তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ডিসেম্বর মাসে করোনায় জেলায় কোনো প্রাণহানি হয়নি। কিন্তু চলতি জানুয়ারিতে আবারও করোনা শনাক্ত বাড়তে শুরু করেছে। ফলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও মাস্ক পরার বিকল্প নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর