মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
অন্যের লাইসেন্সে মেয়র মালেকের কাজ

সাত সরকারি স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হবে কবে?

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহীর বাগমারায় অন্যের লাইসেন্সে সরকারি সাতটি বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজ নিয়েছেন ভবানীগঞ্জ পৌর মেয়র আবদুল মালেক। গত বছরের জুন-জুলাই মাসের মধ্যে এসব ভবনের কাজ শেষ করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু কোনো স্কুলের কাজ অর্ধেক-ই হয়নি। এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে কাজের মেয়াদ। তবে ভবানীগঞ্জ পৌর মেয়র আবদুল মালেক মন্ডল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কোথাও পুরাতন ভবন ভাঙতে সময় লেগেছে। কোথাও জটিলতার কারণে কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। তবে এ বছরের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করে দেব।’ বাগমারা প্রকৌশল দফতর সূত্র জানায়, ভবানীগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বুজরুককোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হায়াতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মচমইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বারুইপাড়া (২) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দ্বীপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ নেন ভবানীগঞ্জ পৌর মেয়র। এ জন্য ব্যবহার করা হয়েছে মেসার্স ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স, মেসার্স নূর কনস্ট্র্রাকশন ও ডন এন্টারপ্রাইজের লাইসেন্স। ভবানীগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ জারি হয়েছে ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২১ সালের ১৭ জুলাই। কিন্তু কাজটি অর্ধেকও শেষ হয়নি। মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ভবনটির চুক্তিমূল্য ৬৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বাগমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও একই অবস্থা। তিন মাস ধরে বন্ধ আছে কাজ। বিদ্যালয়টি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৬৭ লাখ ৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ না হওয়ায় আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বুজরুককোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। বিদ্যালয়টি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা। মচমইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ কোটি ২ লাখ টাকা। হায়াতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শেষ হয়েছে নির্মাণকাজের মেয়াদ। মেয়াদ শেষ হলেও বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরুই হয়নি। যার চুক্তিমূল্য ৮০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

বারুইপাড়া (২) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ১ জুলাই। মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল গত বছরের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। তারপরও শেষ হয়নি ভবনটির নির্মাণকাজ। এখন ৮ মাস ধরে বন্ধ আছে কাজ। বিদ্যালয়টির চুক্তিমূল্য ৭০ লাখ টাকা। মেসার্স নূর কনস্ট্র্রাকশন কাজটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হলেও তা করছেন মেয়র আবদুল মালেক মন্ডল। ডন এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে দ্বীপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন কাজটি নিয়েছেন মেয়র আবদুল মালেক। নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ৭ আগস্ট। দীর্ঘ সময় পার হলেও শেষ হয়নি কাজ। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৩৮ লাখ টাকা।

বাগমারা উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘কাজ শেষ করতে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। মৌখিকভাবেও তাগাদা দিচ্ছি। কিন্তু কোনো গুরুত্বই দিচ্ছেন না মেয়র। কাজ শুরু করলে শেষ করতে সময় লাগবে না। কিন্তু তিনি আন্তরিকতা নিয়ে কাজগুলোই করছেন না।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর