সোমবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

মেট্রোরেলের স্বপ্ন এবার চট্টগ্রামে

শুরু হচ্ছে সমীক্ষা, চালু হচ্ছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের যানজট নিরসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় উৎকর্ষতা আনতে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সমীক্ষার কাজ শুরু করবে কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া আগামীকাল চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কোরিয়া প্রতিনিধি দল এবং অংশীজনের সঙ্গে মেট্রোরেল সংক্রান্ত একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর আগে চীনা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমীক্ষা পরিচালনার কথা ছিল। গতকাল সকালে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে মেট্রোরেল নিয়ে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জেং কিউনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। সভায় সমীক্ষার বিষয়টি সিদ্ধান্ত হয়। জানা যায়, কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান কোইকা চট্টগ্রাম মেট্রোরেল নিয়ে সমীক্ষা করবে। এ কাজে ব্যয় হবে ৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে কোরিয়া সরকারের অনুদান ৫১ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ২৬ কোটি টাকা। ইতোমধ্যেই কোরিয়া থেকে একটি বিশেষজ্ঞ সার্ভে টিম বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।

দলটি আগামী ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগরীর উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তও সংগ্রহ করবেন। সার্ভে টিম আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সঙ্গে এক রিভিউ সভা করবেন। আগামী এক বছরের মধ্যে সমীক্ষা কাজ শেষ করার কথা।  চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর বলেন, ‘চট্টগ্রামে মেট্রোরেল বাস্তবায়ন কাজ এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে সমীক্ষা করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কিছু কর্মসূচিও আছে। শিগগিরই মাঠ পর্যায়ে সমীক্ষা কাজ শুরু হবে। জানা যায়, চসিক ২০১৯ সালের জুলাইয়ে প্রাক-যোগ্যতা সমীক্ষা করে। তখন সমীক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা ধরে সম্ভাব্য মোট ৮৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। পরে উদ্যোগটির আর কোনো অগ্রগতি ছিল না। তবে গত ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ঢাকায় কেন মেট্রোরেল সীমাবদ্ধ থাকবে’ বলার পর চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল চালুর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে শুরু হয় তৎপরতা। গত ১৩ জানুয়ারি স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় ‘চট্টগ্রাম মহানগরীতে মেট্রোরেল অথবা মনোরেল চালুকরণ’ শীর্ষক সভা। তবে গতকাল সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে সমীক্ষার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।

চলতি বছরই চালু হচ্ছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল : চলতি বছরের জুনে চালু হচ্ছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল। এতে বন্দরের কনটেইনার রাখার সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বছরে ১৪৫ মিলিয়ন টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডেলিং করা সম্ভব হবে। রবিবার চট্টগ্রাম বন্দরে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান। অনুষ্ঠানে ইতালির রাষ্ট্রদূত এইচ ই এনরিকো নানজিয়া বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের জনপ্রিয়তা রয়েছে ইউরোপে। তাই ইউরোপ-বাংলাদেশের বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম-ইতালি রুটে জাহাজ চলাচল দুই দেশের বাণিজ্যের প্রসারতার বড় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এইচ ই চার্লস স্টুয়ার্ড হুইটলে বলেন, প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম-ইতালি রুটে পোশাক পণ্য নিয়ে জাহাজ চলাচল করবে। এতে করে একটি সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিবেশ তৈরি হবে। করোনার কারণে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। পোশাক খাতে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর