করোনা পরিস্থিতিতে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়া সংগঠনকে গতিশীল ও শক্তিশালী করতে মাঠে নেমেছে খুলনা আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে নগরী ও জেলা কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন ইউনিটে সম্মেলনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে ওয়ার্ড পর্যায়ের ধারাবাহিক কর্মিসভার পরিকল্পনা নিয়েছে দলটি। দলের সিনিয়র নেতারা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে দলে সাংগঠনিক কর্মকান্ড আগেভাগেই গুছিয়ে রাখতে কেন্দ্রের নির্দেশনা রয়েছে। সে হিসেবে তৃণমূলে শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করতে সাংগঠনিক কর্মকান্ড শুরু হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সভায় তিন মাসের মধ্যে সম্মেলন শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পরই নড়েচড়ে বসে খুলনা আওয়ামী লীগ।
জানা যায়, খুলনার নয় উপজেলা ও দুই পৌরসভার অধিকাংশ কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, ক্ষোভসহ নানা কারণে নেতা-কর্মীর অনেকেই নিষ্ক্রিয়। বিগত ইউপি নির্বাচনে মতদ্বন্দ্বে বড় খেসারত দিয়েছে খুলনা আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন ইউনিয়নে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের সমর্থনে সক্রিয় থাকায় ২ শতাধিক নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী বলেন, ‘সাংগঠনিক কর্মকান্ডে গতি ফেরাতে কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এর আগে নৌকার বিপক্ষে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের দায়িত্বশীল কোনো পদে আনা হবে না। আওয়ামী লীগ আন্দোলন ও নির্বাচনমুখী দল। আন্দোলনে অভ্যস্ত ও অভিজ্ঞতা আছে এমন নেতা-কর্মীদের সামনে আনা হচ্ছে। বিরোধীরা মাঠে নামলে যেন তাদের রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করা যায়।’ এদিকে মূল দলের পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনগুলো পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মহানগরী আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক মুন্সি মাহাবুব আলম সোহাগ বলেন, ‘সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, মহানগরী ছাত্রলীগ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর পুনরায় সম্মেলন দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনা হবে। পাশাপাশি যেসব উপজেলা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে সেখানেও সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
মাঠ পর্যায়ের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে ওয়ার্ড পর্যায়ের ধারাবাহিক কর্মিসভা আয়োজনের কথা জানালেন মহানগরী আওয়ামী লীগ সভাপতি, সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। তিনি বলেন, ‘আমরা মার্চজুড়ে সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা করব। মাঠ পর্যায়ের অবস্থান নতুনভাবে ঝালাই করতে নগরীর ৩৬ ওয়ার্ডের প্রতিটিতে আলাদা কর্মিসভা করা হবে। সদর উপজেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি। সেখানে নয়টি ওয়ার্ডের কমিটি করা আছে। সেসব যাচাই-বাছাই করে সদর উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটিও ঘোষণা করা হবে।’