শিরোনাম
বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
পুত্রের হাতে পিতা খুন

চার বছর পর রহস্য উদঘাটন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরের পীরগঞ্জে ছেলের হাতে পিতা খুন হওয়ার চার বছর পর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই পুলিশ। সেই সঙ্গে হত্যার অভিযোগে ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চাপাবাড়ি গ্রামের মৃত নয়া মিয়ার ছেলে দেলদার মিয়াকে (৬০) রক্তাক্ত অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেলদার মিয়া দুই দিন পর মারা যান। এ বিষয়ে রংপুর কোতোয়ালি থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়। কিন্তু ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ভিন্ন রিপোর্ট আসে। পরে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলাটি কোতোয়ালি থানা থেকে পীরগঞ্জ থানায় পাঠানো হলে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করা হয়।

 পীরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে না পেরে ২০১৯ সালের ৫ জুলাই চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন। আদালত মামলাটির চূড়ান্ত রিপোর্ট গ্রহণ না করে পিবিআই রংপুর জেলাকে অধিকতর তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করলে মামলাটির তদন্তভার এসআই মো. শফিউল আলমের ওপর অর্পণ করা হয়। পিবিআই তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে ও বিজ্ঞানভিত্তিক তদন্তের মাধ্যমে জানতে পারে ঘটনার দিন দেলদার মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রীর কন্যা দেলোয়ারা বেগম তার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজ পিত্রালয়ে কিছু বাঁশ ও বাঁশখড়ি নেওয়ার জন্য আসেন। এ বিষয়ে দেলদার মিয়ার চতুর্থ স্ত্রী শাহার বানুর সঙ্গে দেলোয়ারা বেগমের ঝগড়া হয়। দেলোয়ারা বেগম বাঁশ কাটতে গেলে দেলদার মিয়া বাধা সৃষ্টি করেন। তখন দেলোয়ারা বেগমের আপন ভাই সোহেল মিয়া ওরফে লেবু মিয়া (৩৭) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার পিতার সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন এবং একপর্যায়ে কাটা বাঁশ নিয়ে তার পিতা দেলদারের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করলে দেলদার মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মৃত্যুর ঘটনাকে দুর্ঘটনা অর্থাৎ বাঁশ কাটতে গিয়ে আকস্মিক আঘাত প্রাপ্ত হয়ে মৃত্যু হন মর্মে প্রচার করা হয়। এরপর সোহেল মিয়া ওরফে লেবু মিয়া গা ঢাকা দেন। ২১ ফেব্রুয়ারি পিবিআই পুলিশ লেবু মিয়াকে গ্রেফতার করে। পরে লেবু মিয়া হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জাবানবন্দি প্রদান করেন। পিবিআই রংপুর জেলার পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন বলেন, পুত্র তার পিতাকে হত্যা করায় এবং পরিবারের লোকজন আন্তরিকভাবে সহায়তা না করায় মামলার রহস্য উদঘাটনে সময় লেগেছে। তবে চার বছর পরে হলেও হত্যার রহস্য উদঘাটন হওয়ায় জনমনে স্বস্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর