শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

জিন্নাতুন নূর

জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

ঈদ সামনে রেখে নগরীতে জমে উঠেছে কেনাকাটা। গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার পয়লা বৈশাখের দিনও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্রেতা ঈদের বাজার সারেন। ঈদের আগে আরও দুটি সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও বিক্রেতারা আশা করছেন গতকাল থেকেই ঈদের মূল কেনাকাটা শুরু হয়েছে । রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে গতকাল সকাল থেকে পরিবার পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে ক্রেতাদের ঈদের বাজার করতে দেখা যায়। বসুন্ধরা সিটিতে আসা মিরপুরের বাসিন্দা জনি আহমেদ বলেন, ‘কাজের জন্য ঈদের দুই দিন আগে আমি বাড়ি যাব কিন্তু আগামী সপ্তাহেই পরিবারের অন্যদের গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এজন্য আজ ঈদের কেনাকাটা সারতে এসেছি।’ জনি আহমেদের স্ত্রী লুবনা আহমেদ বলেন, ‘গরমের কারণে এবার সুতির আরামদায়ক শাড়ি কিনব বলে ঠিক করেছি।’ আর এই দম্পতির প্রাথমিকে পড়ুয়া দুই মেয়ের জন্য তারা পার্টি ফ্রক ও স্কার্ট দেখছিলেন। এই শপিং মলের ‘দেশি দশ’-এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেহজাবীন শিকদার তার দুই বান্ধবীকে নিয়ে দেশীয় সালোয়ার কামিজ দেখতে এসেছিলেন। এখানকার দেশীয় ব্র্যান্ড ‘নিপুণ’-এ তারা পোশাক দেখছিলেন। তিনি জানান, ঈদ ও সাধারণ সময়ে ক্যাম্পাসে পরার উপযোগী আরামদায়ক সালোয়ার কামিজ খুঁজছেন। নিপুণের বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান, লিলেন ও সুতি কাপড়ের সালোয়ার কামিজে হ্যান্ড অ্যামব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট এবং গুজরাটি ইয়র্কের কাজ করা হয়েছে। আর শাড়িতে ব্লক ও স্ক্রিন প্রিন্ট, টারসেল ও গ্লাসের ব্যবহার করা হয়েছে। বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের লেভেল-২ এ পাঞ্জাবির জন্য জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘লুবনান’। প্রতি ঈদের মতো এবারও ব্র্যান্ডটি জাঁমজমকপূর্ণ ঈদের পাঞ্জাবি এনেছে। লুবনান ক্রেতার জন্য এবার বিভিন্ন মূল্যের ঈদ গিফট কার্ডও নিয়ে এসেছে। এতে কেউ চাইলে প্রিয়জনকে সরাসরি পাঞ্জাবি কিনে দেওয়ার বদলে গিফট কার্ড দিতে পারেন। ফলে একজন নিজের পছন্দ অনুযায়ী পাঞ্জাবি কিনতে পারবেন। লুবনান-এর বিক্রেতারা জানান, শিশুদের জন্য এবার তারা প্রিন্টের পাঞ্জাবি এনেছে আর বড়দের জন্য পাঞ্জাবি সেটের পাশাপাশি, ওয়েস্টকোট ও সিঙ্গেল পাঞ্জাবি এনেছে। রাজধানীর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটেও বিভিন্ন বয়সী ক্রেতারা এখন ঈদের কেনাকাটা সারতে ভিড় করছেন। বৈশাখের দিন আজিজ সুপার মার্কেটে তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি বেশি দেখা যায়। ‘দেশাল’ এর আউটলেটে কথা হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রেজওয়ান বিশ্বাস বলেন, ‘আমি বরাবরই সুতির হালকা নকশার পাঞ্জাবি পরতে পছন্দ করি। এ ক্ষেত্রে ‘দেশাল’-এর একরঙা পাঞ্জাবি বেশ ভালো লাগে। আজ শুধু দেখছি, বাড়ি যাওয়ার আগে কিনে নেব।’ নগরীর বিভিন্ন ফুটপাথেও এরই মধ্যে নিম্নমধ্যবিত্তরা ঈদের কেনাকাটা শুরু করেছেন। মিরপুর ১০ নম্বর ল্যাবরেটরি গার্লস আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের সামনে নববর্ষের আগে থেকেই বিভিন্ন শ্রেণির ক্রেতাদের কেনাকাটা করতে দেখা যাচ্ছে। গতকাল ওই এলাকার ফুটপাথগুলো ছিল জমজমাট। ঈদের জন্য ক্রেতারা এই জায়গা থেকে কম দামে জুতা, গজ কাপড়, ওড়না, ব্যাগ, কসমেটিক্স আইটেম কিনছেন। কথা হলে ১১ নম্বর এর পোশাক শ্রমিক নাসরিন আক্তার জানান, ছোট বোন ও তার জন্য মিলিয়ে গজ কাপড় কিনেছেন। সঙ্গে একই রঙের হিল জুতা কিনেছেন। মিরপুর বেনারসি পল্লীতে বিয়ের মৌসুম ছাড়া বেচাবিক্রি তেমন না হলেও ঈদে এই পল্লীতে ভারি কাজের শাড়ি কিনতে অনেকেই আসেন। গতকালও বেশ কিছু দোকানে ক্রেতাদের ঈদের জন্য শাড়ি কিনতে দেখা যায়। এদিকে ঈদ সামনে রেখে নগরীর বিভিন্ন স্থানে নারী উদ্যোক্তাদের উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের হাতের তৈরি পোশাক ছাড়াও ঘর সাজানোর বিভিন্ন উপকরণ বিক্রি হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর