ফুটপাথ দিয়ে পথচারীদের নির্বিঘ্ন চলাচল ও হকারদের শৃঙ্খলায় আনতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে চারটি প্রধান সড়কে সপ্তাহে চার দিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফুটপাথের নির্দিষ্ট স্থানে বসবে হকার। এসব হকারের ছবিসহ তালিকা অ্যাপসের মধ্যে থাকবে। চাইলেই নতুন করে কেউ বসতে পারবে না। ঈদুল ফিতরের পর যে কোনো দিন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন ডিএনসিসি মেয়র। আর এ উদ্যোগটি ডিএনসিসি ও ব্র্যাক যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে। এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ফুটপাথে হকারদের শৃঙ্খলা ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সপ্তাহে চার দিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হকাররা বসবেন। যারা বসবেন তাদের সম্পূর্ণ ডাটা আমাদের কাছে থাকবে। নির্দিষ্ট হকারের বাইরে কেউ বসতে পারবেন না।’ এক প্রশ্নে তিনি বলেন, মিরপুর-১০ গোলচত্বর থেকে ৫০ মিটার দূরে হকারদের বসানো হবে। ফুটওভার ব্রিজ থেকে নেমে চলাচলে পথচারীদের যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয়। হকারদের জন্য ফুটপাথে ৩ বাই ৪ ফুট জায়গা নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছে। এ সীমানার ভিতর তারা বসবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এটা নিয়ে গবেষণা করেছে। এ ছাড়া এ বিষয়টা নিয়ে সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর অনেক চিন্তাভাবনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা আমাদের পাইলটিং উদ্যোগ। এটা সফল হলে পুরো শহরে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গণপরিসর ব্যবস্থাপনা পাইলটিং বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ফুটপাথ ও সড়কগুলোকে সর্বসাধারণের জন্য নিরাপদ চলাচলের উপযোগী করতে নগরীর হকারদের শৃঙ্খলার বেষ্টনীতে আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের আলোকে প্রাথমিকভাবে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে চারদিকের চারটি সড়কে হকারদের বসানো হবে। মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র- সপ্তাহের এ চার দিন ফুটপাথে তারা বসতে পারবেন। তবে এ চার দিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বসবেন তারা। এ নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে বসতে পারবেন না। মূলত হকারদের মোটিভেশন করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। এ ছাড়া সপ্তাহের বাকি তিন দিন তারা ফুটপাথে বসতে পারবেন না। প্রাথমিকভাবে হকারদের প্রকৃত তালিকা তৈরি করে তাদের ছবিসহ পরিচয়পত্র অ্যাপসে সংরক্ষণ করা হবে। এসব হকার সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত জায়গা ৩ বাই ৪ ফুট অংশে বসবেন। তবে নির্দিষ্ট হকারের বাইরে কেউ বসতে পারবেন না। পণ্যের ধরন অনুসারে নির্ধারিত জোন অনুযায়ী চিহ্নিত স্থানে বসানো হবে। তবে ফুটপাথে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না এবং অনুমতিও দেওয়া হবে না। আর হকারদের কোনো স্থায়ী অনুমোদন দেওয়া যাবে না। কোনো ধরনের ফি আদায় করা যাবে না। রাস্তা বা ফুটপাথে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। আশপাশে কোনো বর্জ্য ফেলা যাবে না।
এ ছাড়া নিজ দায়িত্বে চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। সিটি করপোরেশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে কোনো সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক মেনে নিতে হবে। ফুটপাথে খাবারের মান ও বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে।