নেতৃত্ব বদলেও গুণগত পরিবর্তন হয়নি বরিশাল মহানগর বিএনপির। এ জন্য আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আহ্বায়ক কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতে মহানগরের ৩০ ওয়ার্ডে নতুন কমিটি করতে সাংগঠনিক টিম গঠনের নির্দেশ দেন। অথচ একতরফাভাবে সাতটি টিম গঠনের অভিযোগ উঠেছে আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের বিরুদ্ধে। অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে সবকিছু সাংগঠনিক রীতি মেনেই হয়েছে বলে দাবি করেছেন সদস্যসচিব। প্রায় তিন দশকের নেতৃত্ব থেকে মহানগর বিএনপির তৎকালীন সভাপতি সাবেক এমপি ও মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ারকে সরিয়ে গত বছরের ৩ নভেম্বর বরিশাল মহানগরে তিন সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। পরে ২২ জানুয়ারি ৪২ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতিতে গুণগত কিছু পরিবর্তন হওয়ার আশায় ছিলেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন হয়নি। কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে দুই নেতা নিজেদের মনগড়া টিম গঠন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, ‘৫ জুন ঢাকার পল্টন অফিসে জুমের মাধ্যমে বরিশাল মহানগর বিএনপির সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই সভায় তিনি মহানগরের ওয়ার্ড কমিটি গঠন এবং দলীয় তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একাধিক সাংগঠনিক টিম গঠনের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মহানগর কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতে সাংগঠনিক টিম গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কথা থাকে যুগ্ম আহ্বায়করা প্রতিটি টিমের প্রধান হবেন। ওই টিম স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যোগ্যদের নিয়ে সম্ভাব্য ওয়ার্ড কমিটি মহানগর নেতাদের কাছে দেবেন।
মহানগর কমিটির আহ্বায়ক, ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব যাচাই-বাছাই শেষে ওই ওয়ার্ড কমিটি অনুমোদন দেবেন। কিন্তু ২৬ জুন দুজন যুগ্ম আহ্বায়ক এবং অন্য সদস্যদের না জানিয়ে দলীয় কার্যালয়ে সভা করে সাতটি সাংগঠনিক টিম গঠন করেন আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব। যা বিধিসম্মত হয়নি।’ সাংগঠনিক টিমে থাকা অনেকে ১২ থেকে ১৫ বছর ধরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় বলেও অভিযোগ তোলেন এই নেত্রী।
মহানগর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক আলী হায়দার বাবুল বলেন, ‘মহানগরে সাংগঠনিক টিম গঠনে দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ পুরোপুরি উপেক্ষিত হয়েছে। আহ্বায়ক, ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের স্বাক্ষরে টিম গঠন চূড়ান্ত করে কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ ছিল। কিন্তু আমাকে বাদ দিয়ে তারা দুজন একতরফাভাবে সাতটি টিম গঠন করেন। টিম গঠনের ক্ষেত্রে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। আমার কোনো স্বাক্ষরও নেওয়া হয়নি।’জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির বলেন, ‘আমন্ত্রণ পেয়েও দুজন যুগ্ম আহ্বায়ক উপস্থিত হননি। বাকি ছয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক মর্যাদার ১ নম্বর সদস্যকে নিয়ে সাতটি টিম গঠন করা হয়েছে।’