বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংসদে জানিয়েছেন, ২০০৬ সালে দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের মোট চাহিদা ছিল দৈনিক ১ হাজার ৫০২ মিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমান চাহিদা প্রায় ৩ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। সে হিসাবে ১৬ বছরে দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে ২ হাজার ১৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট। একই সময়ে খনিজ তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ লাখ মেট্রিক টন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের বাজেট অধিবেশনে গতকালের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের এম আবদুল লতিফ (চট্টগ্রাম-১১) প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে দেশে খনিজ তেলের চাহিদা ছিল প্রায় ৩৫.৭৩ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে চাহিদা প্রায় ৬৩ লাখ মেট্রিক টন। চাহিদার বিপরীতে সরকারি/বিপিসির নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন। এ ছাড়া অন্যান্য উৎস (সরকারি/বেসরকারি ফ্রাকশনেশন প্লান্ট) থেকে বার্ষিক ৪-৪.৫ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি পণ্য পাওয়া যায়। এ সময় তিনি জানান, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দেশীয় গ্যাস ক্ষেত্রসমূহ থেকে উৎপাদন দৈনিক ২ হাজার ৪৩২ মিলিয়ন ঘনফুট এবং এলএনজি আমদানির সক্ষমতা দৈনিক ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুটের সমতুল্য।
তন্মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরে দৈনিক ৮২৫ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জকিগঞ্জে নতুন গ্যাসক্ষেত্রে পাওয়া গেছে : আনোয়ার হোসেন খানের (লক্ষ্মীপুর-১) প্রশ্নের লিখিত জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত দেশে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায় নতুন একটি গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র। বান্দরবান, খাগড়াছড়িসহ পাহাড়ি এলাকায় গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে খাগড়াছড়ি জেলায় অবস্থিত সেমুতাং গ্যাসক্ষেত্র ও এর পার্শ্ববর্তী ২৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক সাইসমিক জরিপ সম্পন্ন করা হয়েছে। বর্তমানে ২টি সাইসমিক সার্ভে ওভার এক্সপ্লোরেশন ব্লক ১৫ ও ২২ প্রকল্পের আওতায় ফেনী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়িসহ পাহাড়ি এলাকায় দ্বিমাত্রিক সাইসমিক জরিপ কার্যক্রম চলমান আছে। এ ছাড়া পার্বত্য এলাকায় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে তেল/গ্যাস অনুসন্ধানের লক্ষ্যে ‘এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট’ আহ্বান করা হয়। বিনিয়োগে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানসমূহের দাখিলকৃত প্রস্তাবসমূহ মূল্যায়ন করে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল প্রদানের কাজ চলমান রয়েছে।