বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে সৃষ্ট ও পরিবেশিত সংগীতই যন্ত্রসংগীত। কণ্ঠসংগীতের সঙ্গে অনুষঙ্গ হিসেবে বহুল ব্যবহৃত হলেও শুধু যন্ত্রসংগীত পরিবেশনের দর্শক চাহিদাও কম নয়। বীণা, সেতার, সরোদ, তবলা, শানাই, তার শানাই, গিটার, এসরাজ, বাঁশি, সারেঙ্গি, একতারা, দোতারা, বেহালা ইত্যাদির একক বাদন এবং বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রসংগীতের যুগলবন্দি বা সমবেত বাদন দেশে বেশ জনপ্রিয়। যন্ত্রসংগীতকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে শিল্পকলায় শুরু হলো দুই দিনের জাতীয় যন্ত্রসংগীত উৎসব। গতকাল সন্ধ্যায় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে এই আয়োজনের প্রথম দিনে অংশ নেন পণ্ডিত কুমার বোস, টুংটাং, রুবাব, আশিকুর রহমান, কুমারেশ, সৈয়দ মেহের হোসেন, পল্লব সান্যাল, সুশেন কুমার, মো. নুরুজ্জামান, অনুপম বিশ্বাস, মতিয়ার রহমান প্রমুখ। আজ শেষ হবে এই উৎসব।
শিল্পকলায় রাঢ়াঙ : সাঁওতাল সম্প্রদায়ের যাপিত জীবনের নানা দুঃখ-কষ্ট নিয়ে নাটকের দল আরণ্যক মঞ্চায়ন করল তাদের দর্শকনন্দিত নাটক ‘রাঢ়াঙ’। গতকাল শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিত্যদিনের হালচালে মলিন বেশভূষা। খেয়ে না খেয়ে সভ্য সমাজের মানুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোনোভাবে বেঁচে থাকা। নিজেকে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে প্রত্যেক সাঁওতাল প্রায় একপ্রকার যুদ্ধে লিপ্ত। অধিকার আদায়ে বিদ্রোহ দানা বেঁধে ওঠে প্রান্তিক সাঁওতালদের মাঝে। তবে এটা শুধু নিছক বিদ্রোহ ছিল না, অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে অধিকার আদায়ের এক গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। থানার দারোগা থেকে শুরু করে গ্রামের মাতব্বর, এমনকি অধিকার আদায়ে সচেষ্ট বিদ্রোহী তরুণরাও অস্তিত্ব সংকটে ভোগে।
কেউ মারে, কেউ মরে, মায়ের আর্তনাদে কেঁপে ওঠে আকাশ, নির্মমতার জাঁতাকলে ভারী হয় বাতাস। একই দেশ, একই সমাজে থেকেও জীবনযুদ্ধে অবহেলিত ও নিগৃহীত থাকে সাঁওতাল সমাজ। অধিকার আদায় ও ভালোভাবে বেঁচে থাকার নিরন্তন প্রচেষ্টায় এগিয়ে যায় প্রান্তিক সাঁওতালরা। অবশেষে জয় হয় মানবতার। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকটির কাহিনি। মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত নাটকটির বিভিন্ন্ চরিত্রে অভিনয় করেছেন দলের নিয়মিত নাট্যকর্মীরা।বরেণ্য দুই চারুশিল্পী স্মরণ : আলোচনা ও স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে দেশের বরেণ্য শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও পটুয়া কামরুল হাসানকে স্মরণ করেছে শিল্পকলা একাডেমি। গতকাল সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় এই স্মরণানুষ্ঠান। এতে অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনিরুল আলম। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্প সমালোচক মোস্তফা জামান মিঠু।
আলোচক ছিলেন শিল্পসমালোচক ও নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম এবং শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ভ্রাতুষ্পুত্র শিল্পী মিজানুর রহমান। পটুয়া কামরুল হাসানকে নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। আলোচক ছিলেন শিল্পসমালোচক স্থপতি সামসুল ওয়ারেস ও পটুয়া কামরুল হাসানের কন্যা সুমনা হাসান। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় একাডেমির সচিব মো. আছাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক মিনি করিম।