বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

কলকাতা থেকে তামাবিল হয়ে পণ্য গেল মেঘালয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত ট্রানজিট চুক্তি ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দি ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া (এসিএমপি)’র আওতায় বাংলাদেশের স্থলবন্দর ব্যবহারের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে ভারত। এরই আলোকে কলকাতা থেকে মেশিনারিজ পণ্য নিয়ে আসা ইলেকট্রো স্টিল কাস্টিং লিমিটেডের ৭০ প্যাকেজের ১৬.৩৮০ মেট্রিক টন লোহার পাইপসহ একটি কনটেইনারের চালান গতকাল দুপুরে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে মেঘালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ সময় সিলেটের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সিলেটে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার নীরাজ কুমার জয়শওয়াল, গুয়াহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনারসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

এর আগে ১ আগস্ট কলকাতা বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে একটি জাহাজ বাংলাদেশের উদ্দেশে ছেড়ে রবিবার সকালে মোংলা বন্দরে নোঙর করে। সোমবার দুপুরে খালাসের পর দুটি কনটেইনারের একটি ভারতের মেঘালয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়ে গতকাল সকালে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে পৌঁছায়। আরেকটি কনটেইনার কুমিল্লার বিবির বাজার স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসামে যাওয়ার কথা রয়েছে।

কাস্টমস-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এসিএমপি চুক্তির আওতায় এ পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহন ট্রায়াল রান শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় পণ্য সরবরাহ করতে দুই দেশের মধ্যে ২০১৮ সালের অক্টোবরে চুক্তিটি হয়। এরপর প্রথমবারের মতো ট্রায়াল রান হয়েছিল ২০২০ সালের জুলাইয়ে। কিন্তু করোনা মহামারিসহ নানা জটিলতায় গত চার বছরে এ চুক্তির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পরে ভারতের পক্ষ থেকে চারটি রুটে ট্রায়াল রানের অনুমতি চাওয়া হলে আপাতত দুটি স্থলবন্দর দিয়ে ট্রান্সশিপমেন্ট দিতে রাজি হয় বাংলাদেশ। তার পরিপ্রেক্ষিতে মোংলা বন্দর ব্যবহারবিষয়ক চুক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নে চারটি ট্রায়াল রানের প্রথমটি শুরু করেছে কলকাতা বন্দর। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম ট্রায়ালে কলকাতা থেকে বাংলাদেশি নৌযান (কার্গো) ‘এমভি রিশাদ রায়হান’ পণ্যবোঝাই দুটি কনটেইনার নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে। কনটেইনার দুটির একটিতে ইলেকট্রো স্টিল কাস্টিং লিমিটেডের ৭০ প্যাকেজের ১৬.৩৮০ মেট্রিক টন লোহার পাইপ এবং আরেকটিতে ২৪৯ প্যাকেজে ৮.৫ মেট্রিক টন প্রিফোম রয়েছে। লোহার পাইপভর্তি কনটেইনারটি তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে মেঘালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সিলেটে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার নীরজ কুমার জয়শওয়াল জানান, ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকল রুটে অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবহার করে ব্যবসায়িক গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে দুই দেশের অর্থনীতি ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে আরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সিলেটের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত এসিএমপি ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বাংলাদেশি বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে একটি অনন্য মাইলফলক সৃষ্টি হলো। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।’

সর্বশেষ খবর