বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হট্টগোল-হাতাহাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের ডায়াসে মাইক নেওয়া এবং নেতাদের সামনে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে চরম হট্টগোল, হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। স্লোগানধারী কর্মীদের ‘শুয়োরের বাচ্চা’ বললেন খোদ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। আর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও কাউন্সিলর আনিসুর রহমান  স্লোগানধারীদের হুমকি দিলেন সিসিটিভির ফুটেজ দেখে কাউকে ঘরে ঘুমাতে দেওয়া হবে না। পুলিশ ঘরে ঘরে গিয়ে শায়েস্তা করবে। কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই এ ঘটনা ঘটে গতকাল বিকালে লালবাগের নবাবগঞ্জ পার্কে। সম্মেলন চলাকালে পুরো সময়ই বিশৃঙ্খল ছিল। নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় হাতাহাতি হয়েছে। এমন বিশৃঙ্খল পরিবেশে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বিকাল তিনটায় আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার প্রমুখ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল তিনটায় সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মহানগর আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা মঞ্চে আসতে দেরি করেন।

সম্মেলনের শুরুতে হাজী সেলিমের ছেলে লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী সোলায়মান সেলিমের সমর্থকদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দ্বিতীয় দফায় হাজী সেলিম সমর্থকদের সঙ্গে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকের সমর্থকদের মধ্যে মারামারি হয়। সম্মেলন শুরু হলে আবারও মারামারিতে জড়ান হাজী সেলিমের সমর্থক, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সমর্থক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সমর্থকরা। এক পর্যায়ে পুলিশ সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দিলেও মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন সমর্থকরা পুলিশের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বক্তব্য দেওয়ার সময় আবারও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন হাসিবুর ও হুমায়ুনের সমর্থকরা। পরে নগর আওয়ামী লীগ নেতারা মঞ্চ থেকে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এর আগে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করা নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই কাউন্সিলর আনিসুর রহমান আনিস ও হাসিবুর রহমান মানিক প্রকাশ্য বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হন। সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই সম্মেলনস্থলে অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন লালবাগ থানা আওয়ামী লীগ নেতা ও ঢাকা দক্ষিণের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক। এ সময় ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য আনিসুর রহমান আনিস ডায়াসে এসে হাসিবুর রহমান মানিককে ধমক দিয়ে সরে যেতে বলেন। এ সময় হাজী সেলিমের ছেলে সোলায়মান সেলিমের সমর্থকরাও আনিস বিরোধী নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় আনিস সোলায়মান সেলিমকে উদ্দেশ করে বলেন, সোলায়মান সেলিম মাস্তানি করবেন না।

বক্তব্য দিতে উঠে বিশৃঙ্খলা দেখে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, লাফালাফি, বাড়াবাড়ি করবেন না। নির্বাচনের ১৪ মাস বাকি অথচ শোডাউন দিয়ে শক্তি প্রদর্শন শুরু করেছেন। আপনারা কেউ সংসদ সদস্য (এমপি) হতে পারবেন না, নেতা হতে পারবেন না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর